চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করলেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দরা এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মো. সোলাইমান ওরফে বাঁশি (৫৫)। তিনি সাতকানিয়ার বাজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত ও এলডিপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ভোটকেন্দ্র দখল, এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৬ এপ্রিল) উত্তর সাতকানিয়া সাঙ্গু সাংগঠনিক থানা জামায়াতে ইসলামীর আওতাধীন বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর গণসংযোগ চলাকালীন জামায়াতের এক কর্মী সোলাইমান বাঁশিকে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করান। ওই সময় কেউ একজন সে মুহূর্তের ছবি মুঠোফোনে ধারণ করে রাখেন।
পরে রোববার (২৭ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করানোর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর একাধিক ব্যক্তি ছবিগুলো ফেসবুকে শেয়ার করে বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকেন।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মাসুকুর রহমান ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ইসমাইল মো. রাশেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ইসমাইল মো. রাশেদ তার বিবৃতিতে বলেন, ‘বাজালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর গণসংযোগ চালাকালীন ভুলবশত আওয়ামী শাসনামলের সবচেয়ে বড় ডেভিল সোলাইমান বাঁশিকে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী ফরম পূরণ করা হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যিনি সহযোগী ফরম পূরণ করতে সহায়তা করেছেন তিনি অন্য ইউনিয়নের কর্মী হওয়ায় এ ডেভিলকে চিনতে পারেনি। সেদিন আমি গণসংযোগ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলাম না। আমি উপস্থিত থাকলে এ ঘটনা কখনো ঘটত না।’
তিনি বলেন, ‘ফরম পূরণের ছবিটা যখন আমার দৃষ্টিগোচর হয় তখন আমি এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগ নেতা সোলাইমান বাঁশির হাতে নির্যাতিত অনেক দায়িত্বশীল ও নেতাকর্মী আমাকে ফোন ও মেসেজ দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছেন। সর্বোপরি এ বিষয়টি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নির্যাতিত নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর কাছে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখব।’
এ বিষয়ে উত্তর সাতকানিয়া সাঙ্গু সাংগঠনিক থানা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাস্টার সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি আমি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছি। বাজালিয়া ইউনিয়নে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করানোর বিষয়ে আমি অবগত আছি। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন