ডিসেম্বর বা আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, আমরা দেখতে চাই যে প্রধান উপদেষ্টা তার কথার ওপর ঠিক থাকবেন। তিনি তার কথা বদলাবেন এমন কিছু দেখতে চাই না। যেহেতু কিছু সংস্কারের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে এজন্য নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আগামী বছরের মার্চে রমজান মাস, আমরা বলেছি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হলে নির্বাচন হলে ভালো।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ধর্ম যার যার বাংলাদেশটা হোক সবার। এদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের বসবাস নিশ্চিত করতে চাই। দেশ আমাদের সবার, সুতরাং এ দেশে আমরা সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। এখানে সংখ্যালঘু বলে কোনো জিনিস নেই। সাড়ে ১৫ বছর আমাদের ওপর অনেক জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, একজাতের ফুলে বাগান হয় না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের লোকদের নিয়ে আমরা বহুজাতের ফুল দিয়ে বাগান গড়ব। গত ৫ আগস্টের পরে সনাতনীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় নাশকতার আশঙ্কায় আমাদের দলের কর্মীরা মন্দির পাহারা দিয়েছেন। সেটা কোনো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ছিল না, নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে পাহারা দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ভাইয়েরা যতদিন প্রয়োজন মনে করেছেন, আমাদের কর্মীরা ততদিন তাদের পাশে ছিলেন। কেন মসজিদ, মন্দির, গির্জা পাহারা দিতে হবে? আগামীতে কোনোরূপ পাহারা ছাড়াই আপনারা পূজা উদযাপন করবেন। ভবিষ্যতে কোনো জালিম যদি জুলুম করে তাহলে আপনারা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করবেন। আপনাদের সঙ্গে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবো।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিহিংসার কিংবা প্রতিশোধের রাজনীতি করি না। কারণ এসব কখনও শান্তি বয়ে আনতে পারে না। কোনো মানুষ যদি সহিংসতার শিকার হন, তাহলে প্রচলিত আইনের দ্বারস্থ হবেন। ফ্যাসিবাদী আমলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, তাদের শাসনের যেদিন অবসান ঘটবে তার দুদিনের মধ্যে বাংলাদেশে আ.লীগের কমপক্ষে ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলা-উপজেলায় কেউ তো মারা গেলো না।
মতবিনিময় সভা উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনা করেন।
এতে বক্তব্য দেন কুলাউড়া সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য্য সজল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অরুনাভ দে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ড. রজত কান্তি ভট্টাচার্য্য, পূজা উদযাপন কমিটির সেক্রেটারি অজয় দাস, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামির আলী, বিচিত্র দে, মেম্বার সত্য নারায়ন নাইডু, অশোক ধর, মৌলভীবাজার পৌর জাময়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম ও রাজানুর রহিম ইফতেখার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন