কুমিল্লার গোমতী নদীর চরের জমিতে এবার করলা চাষে এসেছে বাম্পার ফলন। দাম ভালো পাওয়ায় খুশি এই অঞ্চলের কৃষকরা। এখানকার করলা স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
করলা চাষে কৃষকের সফলতা অর্জনে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ফেরায় অনেক কৃষক এখন করলা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। পুরো চরাঞ্চলজুড়ে কৃষকের ক্ষেতে শুধু করলা আর করলা। প্রতিকেজি করলা ক্ষেত থেকেই ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন কৃষক, যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা দরে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গোমতী নদীর বারেরার চর, খলিলপুর, আশানপুর, বালিবাড়ির চরসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেতের মাচায় সবুজ লতার মাঝে দুলছে করলা। কিছু করলা পেকে লাল হয়ে গেছে। প্রতিদিনই দুই বেলা সেই করলা জমি থেকে সংগ্রহ করে রাস্তায় তুললে কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। এ করলা বিক্রির জন্য কষ্ট করে বাজারে নিতে হয় না। জমির আইল থেকেই করলা পাইকাররা কিনে নিয়ে যান।
বারেরার চর এলাকার স্থানীয় কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান, চরাঞ্চলে বারি, হাইব্রিড জাতের করলা উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে। বীজবপনের ৪০-৬০ দিনের মধ্যেই গাছ থেকে করলা পাওয়া যায়। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে করলা সংগ্রহ করা যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৭০-৮০ মণ পর্যন্ত ফসল পাওয়া যায়। প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। বিক্রি করা যায় ২ লাখ টাকার বেশি।
একই এলাকার কৃষক আবু কালাম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। সঙ্গে দামও ভালো পেয়েছি। জমি থেকেই পাইকারি ৫০/৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছি। এবারে আমার জমির করলা প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা বিক্রি করেছি। অনেক লাভবান হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এবারে বৃষ্টি কম হওয়ায় এই চরে করলার আবাদ ভালো হয়েছে। গোমতী নদীর পলিমাটি করলা চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই বছর দেবিদ্বার উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে করলার আবাদ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার করলার দাম ও ফলন বেশি হয়েছে।
এই চরাঞ্চলে করলা ছাড়াও অন্যান্য সবজির চাষ হয়। তবে এবার করলার ফলন কৃষকদের মাঝে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে। বাজারে করলার চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় তারা লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় জানান, গোমতী চরসহ দেবিদ্বারে গত বছর ৩০ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার ৫ হেক্টর বেশি হয়েছে। এই চরাঞ্চলের কৃষকদের মান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ও নিরাপদ ফসল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা এবং সকল ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন