সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ঘরে তোলার জন্য কেটে রাখা কৃষকের ৪ একর জমির ধান দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকার কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে উপজেলার রনভূমি গ্রামের পাশে বরাম হাওরের লাউয়ের বন্দ নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল হান্নান রনভূমি গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, কৃষক আব্দুল হান্নানের নিজের চাষাবাদের জমি নেই। তাই জমির ধানের একটি অংশ মালিককে দেয়ার বার্ষিক চুক্তিতে ৪ একর বোরো জমিতে আবাদ করেছিলেন। ধান পাকলে শ্রমিক নিয়ে কেটে বরাম হাওরের লাউয়ের বন্দ এলাকার একটি পতিত জায়গার ওপরে ধান মাড়াইয়ের অপেক্ষায় স্তূপ করে রাখা হয়।
ভুক্তভোগী কৃষকের ছেলে ফজল উদ্দিন ও ছাদ উদ্দিন জানান, ৪-৫ দিন আগে ৪ একর জমির কাটা ধান মাড়াই করার জন্য স্তূপ করে রেখেছিলেন। ৪-৫ দিন ধরে নিয়মিত সারারাত দুই ভাই পাহারায় থাকতেন। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে রনভূমি গ্রামের আলিফ উদ্দিন, আশিক মিয়া, ছত্তার, পাবেল, রুবেলসহ ১৫-২০ জন ধারালো অস্ত্রের মুখে দুই ভাইকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে পেট্রোল দিয়ে ধানের স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয়। সকালে একদল কৃষি শ্রমিক হাওরে কাজে গিয়ে ঘটনা দেখে ফজল উদ্দিন ও ছাদ উদ্দিনের বাঁধন খুলে দেন। গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে এরই মধ্যে প্রায় ২০০ মণ ধান পুড়ে ছাই হয় বলে দাবি করেন তারা।
পূর্ব বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী ফজল উদ্দিন ও ছাদ উদ্দিন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে আশিক মিয়া বলেন, নিজেদের জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। কিছুদিন আগে হামলা চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমাদের কয়েকজন লোককে গুলিবিদ্ধ করে আহত করেছে। এ ঘটনায় আব্দুল হান্নানের ছেলে তমিজ উদ্দিনসহ দুইজন জেলহাজতে ও কয়েকজন আসামি পলাতক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধান পোড়ানোর ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতাবে নিজেরাই এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবি করেন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দিরাই সার্কেল) মো. শরিফুল হক ও ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওসি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন