গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত আট মাসে শুধু রাউজানে ৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। রাউজানে পাল্টাপাল্টি খুনোখুনির ঘটনা দলীয় কোন্দলের কারণে নয় বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। বালুমহাল, ইটভাটা, চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বে এসব খুনোখুনি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন গোলাম আকবর খোন্দকার।
হত্যাকাণ্ড দলীয় কোন্দলের জেরে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, আমি এটা শতভাগ ডিনাই করছি। এসব ক্ষেত্রে আমাদের দল কখনোই কম্প্রোমাইজ করছে না। আমি দলের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য এসেছি। যারাই সন্ত্রাস করছে, খুনোখুনি করছে, সেটা যত বড় নেতাই হোক, সেটা যদি গোলাম আকবর খোন্দকারও হয়, দল কখনো কম্প্রোমাইজ করবে না।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর রাউজানে আমি বেশ কয়েকটি জনসভা করেছি। বারবার বলছি, কোনো দ্বন্দ্ব, সংঘাতে যেন আমাদের নেতাকর্মীরা না জড়ায়। কোনো অভিযোগ থাকলে আমরা থানায় মামলা করব, যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিচারপ্রার্থী হবো। কিন্তু আমরা কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেই। ইতিবাচক প্রতিযোগিতা ভালো, নেতিবাচক প্রতিযোগিতা দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তাহলে কেন এত খুনোখুনি, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির নেতা বলেন, বালুমহাল, মাটিকাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। গাছের ট্রাক থেকে চাঁদা তোলা হয়। এ চাঁদার ভাগ কোথায় যাচ্ছে, সেটা জনগণের জানার অধিকার আছে। রাউজানে ৩৮টি ইটভাটা আছে, সেখানে দুই লাখ টাকা করে চাঁদা ধার্য করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন এগুলো তদন্ত করে দেখুক কারা করছে। যে অস্ত্রগুলো ৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসীদের জন্য কেনা হয়েছে যৌথবাহিনী এসব অস্ত্র উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে খুনাখুনি ঘটছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি এখানে দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে আসিনি। কারও মুখোশ খুলতেও আসিনি। আমি শুধু আমার দলের অবস্থান পরিষ্কার করতে এসেছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমাদের নামে অসংখ্য মামলা। আমি জীবনে কাউকে একটা ঢিলও মারিনি। আমাকে রাজপথের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। বেশ কিছুদিন আমি কারাগারে ছিলাম। শুধু আমি না, আমাদের অনেক নেতাকর্মীর নামে মামলা আছে। কিন্তু সেই সুবাদে এখন কেউ যদি অপরাধ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে বসে থাকে তাহলে বের করা উচিত। যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হানিফ, মোহাম্মদ ইউনুস চৌধুরী, কাজী সালাউদ্দিন, মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নুর মোহাম্মদ, বেলায়েত হোসেন, রাউজান উপজেলার সভাপতি জসিম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত আট মাসে রাউজানে ৯ জন খুন হয়েছেন, এর মধ্যে ছয়জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মন্তব্য করুন