রোগীর স্বজন ও রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে চিকিৎসকের বাগবিতণ্ডার জেরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের সুপার শাহরিয়ার শায়লা জাহান সাময়িক চিকিৎসাসেবা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বলেছেন, সব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের হাসপাতালে আসার দরকার নেই।
জানা গেছে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব রহমানের সঙ্গে এক রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন। এরপর ডা. মাহবুব রহমান মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের রাউন্ড ও চিকিৎসাসেবা বন্ধের ঘোষণা দেন। এতে সরকারি হাসপাতালে সেবা না পেয়ে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকালে এইচডিইউ বিভাগে মুমূর্ষু অবস্থায় একজন রোগী আসে। রোগীটি কয়েক দিন আগেও একই বিভাগে ভর্তি ছিল। ওয়ার্ডে চিকিৎসকের রাউন্ড ভিজিটের সময় মেডিকেল অফিসার মাহাবুব সেই রোগীর স্বজনদের কাছে পূর্বের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র দেখতে চান। ব্যবস্থাপত্র দেখাতে না পারলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান ডা. মাহবুব।
এ সময় রোগীর স্বজনরা কেন চিকিৎসা হবে না জানতে চেয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে ডা. মাহবুব হাসপাতালে তার জন্য বরাদ্দকৃত চেম্বারে গিয়ে ঘোষণা দেন- চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকবে। এ ঘোষণার পর থেকেই সাময়িকভাবে হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। তবে হাসপাতালের নার্সরা রুটিন চেকআপ অব্যাহত রেখেছেন।
মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন মিজানুর রহমান অপু বলেন, আমার স্ত্রী আজ সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর থেকে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেননি।
শামিমা নামের অপর একজন বলেন, আমার মায়ের অবস্থা খারাপ। এখানে সারা দিন কোনো চিকিৎসা না পাওয়াতে হাসপাতাল ছেড়ে ক্লিনিকে চলে যাচ্ছি।
মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব রহমান বলেন, এইচডিইউ বিভাগে বহিরাগতসহ রোগীর স্বজনরা খারাপ আচরণ করেছে। এজন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে সাময়িকভাবে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে রেখেছি।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সউদ কবির মালিক কালবেলাকে বলেন, সকালে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটির জেরে একটু সমস্যা হয়েছিল। বিষয়টা নিয়ে হাসপাতাল সুপার কাজ করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকাতে আমি সকাল থেকেই আউটডোর এবং ইনডোরের রোগীদের ভিজিটে ব্যস্ত আছি।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সুপার শাহরিয়ার শাইলা জাহান বলেন, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন ডা. মাহাবুব। উনি রোগী না দেখাতে সাময়িক সমস্যা হয়েছে। তবে হাসপাতালের সব বিষয়ে সাংবাদিকদের নজর দেওয়ার দরকার নেই। এমন করলে আমরা পারব না।
মন্তব্য করুন