নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহত ব্যক্তির স্বজনসহ এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের, তার ভাই রাজু আহমেদ, নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী সামসুন নাহার, তার সন্তান রওজা মনি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আলোচিত সাত খুনের মামলার রায় আট বছরেও কার্যকর করা হয়নি। ১১ বছরেও বিচারকাজ শেষ হয়নি। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ঝুলে আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ হত্যা মামলার বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানান তারা।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে সাতজনের লাশ ভেসে ওঠে।
এ ঘটনায় সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। পরে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঘটনার ১১ মাস পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ আদালতে দুটি মামলার অভিন্ন প্রতিবেদন দেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন, অব্যাহতিপ্রাপ্ত র্যাব-১১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করেন নিম্ন আদালত। তাদের মধ্যে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে উচ্চ আদালতে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া নিম্ন আদালতের দেওয়া ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা বহাল রাখেন। বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
মন্তব্য করুন