জলাবদ্ধতা দূরীকরণে চাঁদপুর সদর ও পৌর এলাকায় চলছে ডাকাতিয়া নদীর শত বছরের পুরোনো ৩টি শাখা খালের খনন কাজ। এই খননে ভাগ্য বদলের নতুন স্বপ্ন দেখছেন এলাকার হাজারও কৃষক।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে নাব্য হারানো এই খালগুলো পুরোদমে ভ্যাকু দিয়ে খনন কাজ করতে দেখা যায়।
পুরানবাজারের বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী মিজানুর রহমান জানান, কয়েক মাস আগেও শত বছরের পুরোনো এ খালগুলো নানা আবর্জনা ও পলিমাটি জমে ভরাট থাকায় পানির অনিশ্চয়তায় চাষাবাদ নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় ছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। এছাড়াও খালগুলো পলি জমে নাব্য হারানোর কারণে পানি সংকটে পড়ে নিরবচ্ছিন্ন চাষাবাদ নিয়ে কৃষকদের এমন দুর্ভোগ দৈন্যদশা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। একইসঙ্গে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নাজুক থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হতো এখানকার মানুষ। অবশেষে খাল খননে এসব সমস্যার সমাধানে সুফল পাবে এলাকাবাসী এমনটাই মনে করছি।
চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান জানান, এলাকার কৃষকদের জিইয়ে থাকা দুর্ভোগের দুর্দশার বিষয়টি মাথায় রেখে ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ অর্থাৎ লোহার পুল হতে দোকানঘর এলাকা পর্যন্ত নাপিত বাড়ি খাল ও রাজা বাড়ি খাল ২৪৯৮ মিটার ধরে খালের খনন কাজ চলছে। সারা দেশের পুকুর খাল খনন কাজের অংশ হিসেবে এর মোট ব্যয় প্রায় ৬৭ লাখ টাকা ধরে এলজিইডি আইপিসিপি প্রকল্পে এ খালগুলোর খনন চলছে। যা ৩০ জুনের মধ্যে খনন কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
চাঁদপুর সদরের এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আইয়ুব খান জানান, যে ৩টি খাল খনন হচ্ছে এরমধ্যে পৌর এলাকার ২৪২৮ মিটার বাদে বাকি রঘুনাথপুর খালটি ৮৯৪ মিটার হিসেবে ১৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে খনন কাজ করা হচ্ছে। আর সদরের পাইকগাছা ইমাম মিয়ার বাড়ি হতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পর্যন্ত ১৮৪০ মিটার ধরে খালটি প্রায় ২৩ লাখ ব্যয় হিসেবে দ্রুত গতিতে খনন কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাল খননকাজের ঠিকাদার প্রতিনিধি সৈয়দ আহমেদ বলেন, খাল খননকাজ কৃষক এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণ মাথায় রেখে করা হচ্ছে। একইসঙ্গে খননে খাল হতে উত্তোলিত মাটি খালের পাশের রাস্তা প্রশস্ত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন লোহার পুল হতে দোকানঘর এলাকা পর্যন্ত আনুমানিক আড়াই কিলোমিটার খালের পাশের রাস্তা খননকৃত খালের মাটি দ্বারা প্রশস্ত করা হচ্ছে। আর এই খাল খনন কাজটি এবারই প্রথমবারের মতো করা হচ্ছে। যা এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদসরূপ। আশা করছি, সব ঠিক থাকলে আগামী ২ মাসের মধ্যে খাল খনন কাজ শেষ করতে পারবো।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান কবীর বলেন, এই খালগুলো খনন করা এখানকার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল। দীর্ঘদিন পরে হলেও কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে ব্যাপক আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি এরপর থেকে মানুষ খালে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় সচেতন হবেন। মূলত যে চিন্তা থেকে খালগুলো খনন কাজ করা হচ্ছে তার সুফল খাল খনন শেষে দ্রুতই এখানকার এলাকার মানুষ পাবেন।
মন্তব্য করুন