বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) -এর ভিসি যেভাবে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ করেছেন তদন্ত থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা পর্যন্ত সবকিছুতেই তার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। তিনি পদত্যাগ করেননি, বরং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে। এটি একটি বড় বার্তা। আগামী দিনে যারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করবেন, তাদের জন্য বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সাথী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি কুয়েটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকাকে তিনি ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেন।
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের কথা আমরা আগেও বলেছি। আশা করছি, বেশ কিছু উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা চাই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচিত হোক। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবে এবং লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির ধারা অনেকটাই কমে যাবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে সম্মান করি— ’৫২, ’৬৯ কিংবা ’৭১ —সবকিছুকেই আমরা লালন করি। কিন্তু কোনো একটি গোষ্ঠী যদি একটি গৌরবময় ইতিহাসকে নিজেদের কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে অন্যদের দমন করে, আমরা তার বিপক্ষে। গত ১৫ বছর ধরে যারা একাত্তরের কার্ডকে নিজেদের চেতনা বানিয়ে রেখেছে, তারা এই সময়ে কী করেছে? তারা দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, অর্থ পাচার করেছে— যে অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ চারবার বাজেট করতে পারতো।
তিনি আরও বলেন, এই অর্থ জনগণের— এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হতে পারে না। আমরা পাঁচ আগস্টের পর থেকে একটি বার্তা দিয়ে আসছি— এই আন্দোলন ছাত্রদের মাধ্যমে শুরু হলেও পরবর্তীতে এটা সর্বসাধারণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এটা কোনো একক ব্যক্তির নয়, এটা সবার অর্জন।
শহীদ পরিবারের প্রসঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা শহীদদের স্মরণ করতে এবং তাদের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে রমজান ও ঈদের সময়ও তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছি। আমরা চাই শহীদদের পরিবার যেন একা না থাকে— আমরা তাদের পাশে থাকব।
সামনের দিনের রাজনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের যে গতি শুরু হয়েছে, সেখানে আর আধিপত্যের রাজনীতি থাকবে না। থাকবে মত ও আদর্শের স্বাধীনতা। কেউ কারও ওপর মত চাপিয়ে দেবে না। ছাত্রশিবির আগামী দিনের আদর্শ, সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই তারা দক্ষ ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক।
ছাত্রশিবিরের ঠাকুরগাঁও শহর শাখা আয়োজনে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও ছাত্রশিবিরের শহর শাখার সভাপতি আমজাদ হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন