বগুড়ার সোনাতলায় বাঙালি নদী থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। এতে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আড়িয়ারঘাট সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। নদীপাড়ের বাড়িঘর বর্ষা মৌসুমে হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খরস্রোতা বাঙালি নদীর ভাঙন দেখা দিতে পারে।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে একশ্রেণির বালু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণির বালু ব্যবসায়ী উপজেলার আড়িয়ারঘাট থেকে পোড়াপাইকর (ছলুরঘাট) পর্যন্ত অর্ধশতাধিক স্থানে শ্যালো মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে আসছে। ২০২০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার নামাজখালী, রানীরপাড়া, রংরারপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, হলিদাবগা, পোড়াপাইকর এলাকায় নদীর ডান তীর সংরক্ষণ কাজ করে।
নদীর তীর সংরক্ষণের এ প্রকল্প হুমকির মুখে রয়েছে। নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন করায় বাড়িঘর, ফসলি জমি, গাছপালাও হুমকির মুখে পড়েছে। এ ছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য হারাতে বসেছে।
আড়িয়ারঘাট এলাকার বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম ও চক নন্দন এলাকার মো. শাহিন বলেন, শুধু আমরা নই, বালু তোলার সঙ্গে শতাধিক লোকজন জড়িত। মধুপুর এলাকার বালু ব্যবসায়ী ও আব্দুল মোমিন বলেন, তাদের পয়েন্টে প্রায় ২১ জন বালু তোলার সঙ্গে জড়িত। প্রতি ট্রলি বালু ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, আর প্রতি ট্রাক ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত শতাধিক ট্রলি, ভটভটি ও মিনি ট্রাক চলাচল করছে। ফলে গ্রামীণ সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়ক দিয়ে চলাচল করা মুশকিল হয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া বেপরোয়াভাবে বালু পরিবহনের যান চলাচলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ধুলাবালুতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে সড়ক জলকাদায় পিচ্ছিল হয়ে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, আড়িয়ারঘাট একটি গুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাট। ওই খেয়াঘাটের ওপর প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন