সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা ও হাসপাতাল চালুসহ দুই দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টায় কলেজের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রতীকী রক্তাক্ত অ্যাপ্রোন টানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, দ্রুত হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং চিকিৎসাসেবা চালু করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার বিচার না হওয়া এবং দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নূর নাহার বলেন, চলমান আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরছি না।
পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। ১৫ এপ্রিল থেকে আমাদের কর্মসূচি চলছে। শিক্ষা অধিদপ্তরে আমরা কথা বলেছি, কিন্তু সন্তোষজনক জবাব পাইনি। শুধু আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
সাইদুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, রোববার আমাদের কর্মসূচি চলাকালে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আসেন। তখন আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ৫ মিনিট সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা সেই সময়টুকু আমাদের দেয়নি। বেধড়ক লাঠিপেটা করে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ফটক খুলে দেওয়ার জন্য আমি তাদের অনুরোধ করেছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের অনেক অনুরোধ করেছি ফটক খুলে ক্লাসে যাওয়ার জন্য। তারা আমাদের কথা শুনছে না। আমি তাদের কর্মসূচির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
এর আগে রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নিতে বললেও তারা তা মানতে নারাজ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন।
মন্তব্য করুন