চট্টগ্রামের রাউজানে ভাত খাওয়ার সময় গুলি করে যুবদলের এক কর্মীকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় একই দলের লোকজন জড়িত বলে দাবি পরিবারটির।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব উল্লাহপাড়া গ্রামের ভান্ডারী কলোনির একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবদল কর্মী মানিক আবদুল্লাহ (৩৬) গরিব উল্লাহপাড়া গ্রামের আবদুল মোতালেবের ছেলে। দীর্ঘদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে তিনি দেশে আসেন। স্থানীয় রাজনীতিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত মানিক আবদুল্লাহ। এলাকার বিভিন্ন স্থানে তিনি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছবিসহ তোরণ নির্মাণ এবং ব্যানার টাঙিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
রাউজান থানার এসআই নাসিম কালবেলাকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় গরিবুল্লাহ পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিক আবদুল্লাহ দেশে ফেরার পর স্ত্রী, ১০ বছর বয়সী ১ ছেলে ও ৫ বছরের মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। স্ত্রী-সন্তান ছাড়া গ্রামে গিয়ে ভান্ডারী কলোনির ওই বাসাটিতে ভাত খেতেন। শনিবার রাতেও আরেক যুবদল কর্মীসহ তিনি ওই বাসাটিতে ভাত খাচ্ছিলেন। এ সময় বাসাটিতে ঢুকে ১২ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী গুলি করে তাকে হত্যা করেন। তার শরীরের তিনটি স্থানে গুলি লাগে। হত্যার পর সন্ত্রাসীরা অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে চলে যান।
জানা গেছে, হত্যাকারীরা মুখোশধারী ছিল। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রাউজান থানার ওসিসহ একদল পুলিশ। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহতের ছোট ভাই সাকিল আহমেদ জানান, একই দলের প্রতিপক্ষের কিছু নেতাকর্মী তার ভাই মানিক আবদুল্লাহর ওপর তিন মাস আগেও হামলা করেছিলেন। ভাইয়ের ওপর ক্ষোভ থেকে তার কোচিং সেন্টার ও তার বোনের বাড়িতেও হামলা করা হয়। ওই সন্ত্রাসীরাই তার ভাইকে ভাত খাওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করেছেন।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় নির্যাতনের শিকার হয়ে বিদেশে থাকতে হয়েছে আমার ভাইকে। দেশে ফেরার পর দলের প্রতিপক্ষের হাতে জীবন দিতে হলো। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, একটি বাসায় দুজন রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, এ সময় গুলি করে মানিককে হত্যা করা হয়েছে। তবে তার সঙ্গে থাকা অন্যজনের কোনো খোঁজ মেলেনি। সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করেছেন, নাকি তিনি পালিয়ে গেছেন, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, মানিককে কিছু সন্ত্রাসী হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন, এমন খবর তারা আগে জেনেছেন। এ বিষয়ে তাকেও সতর্ক করা হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন