ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও হোসেনগাঁও যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতিকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোররাতে বীরগঞ্জ গনির হাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় সকালে চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ সমর্থক থানার মূল ফটকের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা চেয়ারম্যানকে ছেড়ে না দিলে তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
হোসেনগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মমতাজ আলী মাস্টারের দায়ের করা ছিনতাইয়ের মামলায় চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, থানা ফটকের সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে, বিক্ষোভকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। যাতে আধা ঘণ্টা মূল সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে ইউএনও শাফিউল মাজলুবিন রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা আরও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে পুলিশের সহায়তায় লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে রাস্তা ও থানা চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় ঘটনাস্খল থেকে চারজনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন মফিজুল ইসলাম সেন্টু (৪০) শিমুল ইসলাম (৩৫) মুক্তারুল ইসলাম (৩২) ও দেলোয়ার হোসেন (৩৭)।
চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার হওয়া মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী ইউনিয়ন বিএনপির মমতাজ আলী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে রাণীশংকৈলে আসার পথে বারোঘরিয়া বাজারে পৌঁছালে চেয়ারম্যান মতি ও তার লোকজন বিএনপি নেতা মমতাজের পথরোধ করে। তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে মারপিট করে। এ সময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও পকেটে থাকা ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা চেয়ারম্যান এবং তার লোকজন ছিনিয়ে নেন।
এ ঘটনায় মমতাজ আলী বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিকে (৪৫) প্রধান আসামি করে আনোয়ার হোসেন (৩৫), মনিরুল ইসলাম মনিরসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলার ১নং আসামি মতিউর রহমান মতিকে রাতে গ্রেপ্তার করে সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি জানান, থানার সামনে চেয়ারম্যানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কিছু লোকজন রাস্তা অবরোধ করে। তাদের আমরা ছত্রভংঙ্গ করে দেই। এ সময় আটককৃত ৪ জনের ব্যপারে পরবর্তীতে জানানো হবে।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ কারণে চেয়ারম্যানের কিছু সমর্থক বেআইনিভাবে রাস্তায় জমায়েত হয়ে রাস্তা অবরোধ করে। এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের সহায়তায় তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মন্তব্য করুন