পঞ্চগড়ে নিজের কোচিং সেন্টারে এক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার মোস্তাফিজুর রহমান পঞ্চগড়ের একটি সরকারি বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক। একই সঙ্গে তার একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি, আপত্তিকর মেসেজ বিনিময়সহ নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর আগেও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। তারপরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বুধবার দুপুরে তার প্রাইভেট সেন্টারে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে আটক করে স্থানীয়রা। একপর্যায়ে তাকে গণপিটুনি দিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে আবারও গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আসিফ আহমদ বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আজ তাকে আটক করার আগে প্রমাণের জন্য আমরা ভিডিও করি। পরে তাকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
মজাহারুল ইসলাম সেলিম বলেন, শিক্ষকেরা জাতি গড়ার কারিগর। তারাই যদি এমন কাজ করেন তাহলে কার কাছে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করবো। আমরা এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তাকে চাকরিচ্যুত করা হোক।
মোকাদ্দসুর রহমান সান বলেন, বুধবার দুপুরে এক শিক্ষককে যৌন হয়রানির অভিযোগে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। আমরা শিক্ষককে আর পঞ্চগড়ে দেখতে চাই না। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পূর্বে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগ কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী বলেন, এর আগে এক ছাত্রীকে ভিডিও পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। পরে তাকে প্রশাসন থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। আজকে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিষয়টি এখন আইনগতভাবে নিষ্পত্তি হবে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বলেন, প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানকে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়রা আটক করে আমাদের দিয়েছেন। আমরা তার মোবাইল পর্ন ভিডিও পেয়েছি। প্রত্যক্ষদর্শীরাও কিছু ভিডিও সংগ্রহ করে আমাদের দিয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন