দিনাজপুরের বিরামপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের পান্তা-ইলিশ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় বাধা দেওয়ায় উপজেলা পরিষদের তিন কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চে বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সময় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেলের বিরামপুর পৌর শাখার স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন কালবেলাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আহত কর্মচারীরা হলেন- উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক ও আবু হোসেন এবং ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি। তারা সবাই বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, ইলিশ, ভর্তা ও পানি পরিবেশন চলছিল। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাসেল ও তার কয়েকজন সহযোগী জোর করে খাবার নেওয়ার চেষ্টা করেন। কর্মচারীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগী অফিস সহায়ক আবু হোসেন বলেন, নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে সকাল থেকে মুক্ত মঞ্চে পান্তা ভাত পরিবেশন চলছিল। এ সময় এমদাদুল ইসলামসহ ৭/৮ জন পান্তা ভাত পরিবেশনে নিয়োজিত ছিলেন। পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আরিফুর রহমান রাসেলসহ ৭/৮ জন লোক ভেতরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ১ কেস পানির বোতল, মাছ ভর্তা ও ১ ড্যাগ পান্তা দাবি করেন। এতে আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর শুরু করেন।
আরেক ভুক্তভোগী নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। রাসেল নিজের মতো করে খাবার নিতে গেলে আমরা বাধা দিই, তখনই তিনি ও তার সঙ্গীরা আমাদের মারধর করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেল বলেন, আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অবমাননার কারণেই এমন হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে, স্বীকার করছি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, এই আচরণ অপ্রত্যাশিত। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এজাহারের মধ্যে কিছু ভুলভ্রান্তি রয়েছে। বিষয়টি সংশোধন করতে হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম বলেন, অনুষ্ঠানে হাজারও মানুষের সমাগম হয়েছিল। এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমার কর্মচারীরা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
পৌর বিএনপি সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু জানান, নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন