শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দুজন আহত হয়েছেন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার জয়নগরের ছাব্বিশপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জাজিরা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন, জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম ছাব্বিশপাড়া এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস খালাসীর ছেলে সাব্বির খালাসী (২১), একই এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম চোকদারের ছেলে সজল চোকদার (২৯)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদার গ্রুপ ও রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালীর গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় এর আগেও একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এবারের সংঘর্ষে একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি সদস্যের সমর্থক জসিম তালুকদার আরেক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিঠুন ঢালীর সমর্থক নুরআলম সরদার।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে দুই গ্রুপের লোকজন বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারির প্রস্তুতি নিলে নুরআলম সরদারের লোকজন বোমা নিক্ষেপ করে। এতে জসিম তালুকদারের পক্ষের সমর্থক সাব্বির খালাসির হাতে লেগে বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে সাব্বিরের হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এর আগে গত শনিবার রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে জসিম তালুকদারের আরেক সমর্থক জাজিরা উপজেলা যুবদল নেতা মাহবুব ইসলাম রনির ভাই সজল চোকদার ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। এর পর রোববার সকালে আবারও সজলের বাড়িতে নুর আলম ও তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। বর্তমানে আহত দুজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করায় দুপক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া সবাই পলাতক রয়েছেন। এ কারণে কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সংঘর্ষের সময়ের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কালবেলার প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, দুপক্ষের লোকজন ককটেল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালগালা করতে করতে সংঘর্ষে জরাচ্ছেন।
আহত সজল চোকদারের মা রাজিয়া বেগম কালবেলাকে বলেন, আমার ছেলে একজন প্রবাসী। কিছুদিনের জন্য ছুটিতে এসেছে। ওরা আমার ছেলের কাছে মাদকসেবনের জন্য টাকা দাবি করে। এতে রাজি না হওয়ায় বাজার থেকে বাড়িতে আসার পথে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দেয়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এদিকে কথা হয় বোমের আঘাতে আহত সাব্বিরের চাচি ফাতেমা বেগমের সঙ্গে। তিনি কালবেলাকে বলেন, আমার ভাতিজা ছোট মানুষ। মারামারির সময় নুর আলমের লোকজন বোমা মারলে সাব্বিরের হাতের ওপর ফুটে যায়। জানি না হাত টিকবে কি না।
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ঘটনায় এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন