কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে গেয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নেওয়া হয়। পাঁচ ঘণ্টা পর এক লাখ ৯৩ হাজার টাকায় মুক্তি মেলে, এমন অভিযোগে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। বাকিদের শাস্তিস্বরূপ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মেলায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রো বাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং এক লাখ ৯৩ হাজার টাকা নেন। টাকার জন্য আমিরকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার অবগত হয়ে রাতেই পুলিশ সুপার তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরে ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আমির হোসেন বলেন, আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর আমাকে মারধর করা হয়েছে। টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
অভিযোগ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমির হোসেন মাদক ব্যবসায়ী। তার কাছে মাদক আছে, এমন অভিযোগে মূলত অভিযান চালানো হয়। কিন্তু ওই দিন তার কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সে কারণে তাকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন