কুমিল্লা জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কোম্পানীগঞ্জ শাখার সভাপতি হাজি ইদ্রিসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাসস্টেশন থেকে দূরপাল্লাসহ আন্তঃজেলার সব রুটের বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করছে কুমিল্লা জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কোম্পানীগঞ্জ শাখা। দুপুরে সহস্রাধিক শ্রমিক বাসস্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
এদিকে বাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সকালে রাস্তায় বের হয়ে বাস না পেয়ে আটোরিকশা-ভ্যানে গন্তব্যে রওনা দিতে হয়েছে তাদের।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কোম্পানীগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ভিপি সেলিম বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাজারের যানজট নিরসনে বাসমালিক সমিতি বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু শ্রমিক নিয়োগ দেয়। যার খরচ বাস মালিক সমিতি বহন করে। ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজন দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান আবুল কালামকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে পুলিশে দেয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মালিক-শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়। সেই মামলায় পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও শ্রমিকদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শ্রমিকরা সব ধরনের বাস বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন।
আন্দোলনকারী শ্রমিক নেতারা বলেন, অনতিবিলম্বে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেপ্তার সবাইকে মুক্তি দেওয়া না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ বাসস্টেশন এলাকা থেকে হাজি ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা জেলা ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাৎক্ষণিক পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা কোম্পানীগঞ্জ থেকে কুমিল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে পরিবহন শ্রমিক ও নেতারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর-নবীনগর সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে সমাবেশ করেন।
গত ২৪ মার্চ কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্টেশনে গাড়ির সিরিয়াল নিয়ে কেরানি ও শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয়কদের একাংশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে থানায় উভয়পক্ষের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। এর জেরে পরিবহন শ্রমিক ও বিএনপির দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে দুটি মামলা করেন পুলিশ ও সমন্বয়করা। দুটি মামলায় বিএনপি ও পরিবহন শ্রমিকদের সাতজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ৭ এপ্রিল আটক বিএনপি নেতা বিল্লাল হোসেনকে এক দিনের রিমান্ড দেন আদালত।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। মামলা আছে, তাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মন্তব্য করুন