হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সরকারি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে বাধা দেওয়ার জেরে সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। রোববার (১৩ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক দুই সদস্য আব্দুর রহমান ওরফে বক্কা ও আলাউদ্দিনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ সংঘর্ষে জড়িতদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ সংঘর্ষে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- এনামুল (৩০), বাহার (২৮), মেহেদী (২১), কাওসার (২৮), ফয়সাল (৩১), জাহিদুল (২২), ভুট্টু মিয়া (৪০), আফদাল (২৬), তকদির (৩৮), জিয়াউর (৩৫), রাতুল (১৬), শামিম (২১), জফর উদ্দিন (৪২), শাওন (১৯) ও শামীম (৩৯)।
এদের মধ্যে এনামুল (৩০), কাউছার (২৮) ও শামীম মিয়াকে (৩৯) অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ৮টায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। বক্কা মেম্বারের পক্ষের লোক হিসেবে পরিচিত ফারজানা বেগম (২৬) বাড়ির পার্শ্ববর্তী আলাউদ্দিন মেম্বারের মেয়ের জামাতা ওয়াহিদ মিয়ার বাড়ির সামনে সরকারি একটি নলকূপ থেকে খাবার পানি আনতে যায়। এ সময় আলাউদ্দিন মেম্বারের পক্ষের ওয়াসিম মিয়া তাকে বাধা দেন। তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ফারজানাকে গালাগালা ও তার চার বছরের শিশুর গালে থাপ্পড় মারে ওয়াসিম মিয়া৷
বিষয়টি নিয়ে রোববার সকালে জলসুখা বাজারে অলি মিয়া ও আজমান মিয়ার মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজন হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়৷ বিষয়টি নিয়ে বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান ও আরও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মাঈদুল হাছান কালবেলাকে বলেন, পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে৷ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন