নগরী ও জেলায় হত্যাসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগে মোট ৮টি মামলায় কারাবন্দি শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে নগরীতে প্রাইভেটকারে গুলিবর্ষণ করে দুজনকে খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিন সাজ্জাদকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মহানগর আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
গত ৩০ মার্চ গভীর রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকা থেকে একাধিক মোটরসাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। প্রাইভেটকারটি বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে প্রবেশ করে নগরীর চকবাজার থানার চন্দনপুরায় পৌঁছানের পর থেমে যায়। তখন বেপরোয়াভাবে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এতে দুই যুবক নিহত ও দুজন আহত হন।
নিহতরা হলেন বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ।
এ ঘটনায় মানিকের মা ফিরোজা বেগম কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ সাতজনকে আসামি করে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে আসামিরা গুলি করে মানিকসহ দুজনকে হত্যা করেছে।
আদালত সূত্র জানায়, রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে মহানগর আদালতে আনা হয়েছে আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে। এ সময় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। চট্টগ্রামের দ্বিতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহীম খলিল পুলিশের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার হাটহাজারী থানার দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ বেগম নাজমুন নাহারের আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এ ছাড়া একই দিনে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে নগরের চান্দগাঁও থানার পাঁচটি মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালত এবং বায়েজিদ থানার একটি মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, বাকলিয়া থানা পুলিশ ডবল মার্ডারের মামলায় সাজ্জাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত সাত দিন মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া আদালত চান্দগাঁও থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫টি ও বায়েজিদ বোস্তামি থানার একটি মামলায় ছোট সাজ্জাদকে শ্যোন অ্যারেস্টের অনুমতি দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) হাবিবুর রহমান রলেন, হাটহাজারী থানা পুলিশ হত্যাসহ দুটি মামলায় সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল।
সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা পুলিশ অস্ত্রসহ ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। একই বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাজ্জাদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে খোদ পুলিশে তোলপাড় শুরু হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসিকে ন্যাংটো করে পেটানোর হুমকি দেন। গত ১৫ মার্চ তাকে ঢাকার বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য করুন