কুমিল্লার দেবিদ্বারে সুদের টাকার বদলে বসতভিটা লিখে দিতে এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ভানি ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ভানি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনির ফরাজির উপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল ও তার অনুসারীরা প্রথমে থাপ্পড় পরে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন ওই নারীকে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম হাসিনা আক্তার। তিনি ভানি ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের মৃত আয়েব আলীর মেয়ে। হাসিনার স্বামীর বাড়ি চান্দিনা উপজেলায়। স্বামীর বাড়িতে জায়গা সম্পত্তি না থাকায় স্বামী সন্তানদের নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে থাকেন।
মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী হাসিনা আক্তার বলেন, আলী আশ্রাফ নামের একজনের কাছ থেকে কিছু টাকা আনছিলাম পত্তনে (সুদ)। টাকাটা দিতে দেরি হচ্ছে। ওই টাকার জন্য আমার বসতভিটা লিখে দিতে মনির ফরাজি ও আবদুল আউয়াল বারবার আমাকে চাপ দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ওইদিন (শনিবার) সকালে বাড়ি থেকে টানা-হেঁচড়া করে আমাকে দোকানের সামনে নিয়ে যায়। আমার সঙ্গে এর আগে তারা আরও চারবার এমন করেছে। তাই আমি বলেছি, আউয়াল মেম্বার ৫০ হাজার টাকা ঘুষ খেয়েছে। ঘুষ খেয়ে আমার সঙ্গে এমন করছে। এটা বলায় আমাকে তারা এভাবে মেরেছে। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভানি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনির ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়ালকে মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। অন্যদিকে সুদে টাকা খাটানো আলী আশ্রাফের সাথেও মোবাইলে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
ভানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা হাজি মো. জালাল উদ্দীন ভূইয়া কালবেলাকে বলেন, কেউ আমার কাছে অভিযোগ জানায়নি। গ্রামের ঘটনা সেখান থেকে ফেসবুকে ছড়িয়েছে। আমিও এভাবেই শুনেছি, দেখেছি। মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।
দেবিদ্বার উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিও আমার নজরে এসেছে। আমি মনির ফরাজির সাথে বিষয়টি জানতে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছে, সালিশ ছিল। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন ইলিয়াস বলেন, নারীকে মারধরের বিষয়ে একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
মন্তব্য করুন