ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রচণ্ড গরম আর তাপপ্রবাহে লিচুর গুটি ঝরে পড়া কোনোভাবেই ঠেকাতে না পারায় দিশাহারা চাষিরা। এমন অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তাদের পাশে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। প্রচণ্ড গরম আর খরায় ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি।
গোপিনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক মাতফর আলী জানান, লিচুর মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখেছিলাম। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে লিচুর গুটি ফিকে হয়ে ঝরে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পরামর্শক্রমে বিভিন্ন রকমের কীটনাশক ব্যবহার করছি। তাতেও কোনো সমাধান মিলছে না। গুটি ঝরা বন্ধ হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, কৃষি অফিসের মাঠ কর্মকর্তাও আসছে না। কোনো যুক্তি পরামর্শ তাদের কাছ থেকে পাচ্ছি না। যদি কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেতাম ভালো হতো।
তবে চাষিরা অসহযোগিতার অভিযোগ করলেও সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন কৃষি কর্মকর্তারা। প্রচণ্ড খরায় লিচুর গুটি ঝরে পড়া রোধ করতে পর্যাপ্ত পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
জগনাথপুর গ্রামের চাষি আলাল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে লিচুর উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হবে। লিচু বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি উঠবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। আগে যে লিচু গাছ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হতো এখন সেই লিচু গাছ ১৫শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। গত কয়েকদিন তীব্র তাপপ্রবাহে এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন লিচু চাষিরা।
জগনাথপুরের আরেক লিচু চাষি জানান, লিচু গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। প্রতিটি গাছেই ব্যাপক মুকুল আসায় এবার লিচু নিয়ে বেশ লাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু গুটি আসা অবস্থায় তীব্র রোদ আর গরমের কারণে পুড়ে গেছে গাছের অনেক মুকুল এবং এখন ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, এ বছর উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এখান থেকে বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের করণীয় বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি লিচুর গুটি ঝরা রোধ করতে সকাল-বিকেল সেচ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, লিচুর গুটি ঝরে পড়ে অনেক সময় পটাশের অভাবে ও সারের অভাবেও লিচু অনেক সময় ঝরে যেতে পারে। এ সময় বোরন স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী যদি গাছে কীটনাশক স্প্রে করা হয় তাহলে লিচু ঝরে পড়ার আশঙ্কা কমে যাবে এবং লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধি হবে।
মন্তব্য করুন