নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একই পরিবারের দুই নারীসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আসামি মো. ইয়াসিনকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইয়াসিন (২৪) সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. দুলালের ছেলে।
এর আগে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার মাটি খুঁড়ে দুই নারী ও শিশুসহ তিনজনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- মৃত আ. ছামাদের মেয়ে লামিয়া আক্তার (২২), তার শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ (৪), বড় বোন স্বপ্না আক্তার (৩৫)। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত লামিয়ার স্বামী মো. ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, আসামি ইয়াসিনের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই মামলায় আসামি ইয়াসিনসহ এজাহারনামীয় আরও দুজন আসামি রয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে নিহত লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন (২৪) ও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে লামিয়ার বিয়ে হয়। বড়বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গেই পশ্চিমপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় সংসারের খরচ চালাতে লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। এমতাবস্থায় মাদকাসক্ত ইয়াসিন প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত এবং হত্যার হুমকি দিত।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত ৭ এপ্রিল দুপুরে লামিয়ার সঙ্গে তাদের বাসায় কথা হয় বোন মুনমুনের। এরপর থেকে তাদের মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। ফলে ইয়াসিন তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তার দুই বোন ও ভাগ্নেকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করতে রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তূপে লুকিয়ে রাখে বলে অভিযোগ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের বোন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আর গ্রেপ্তার আসামি ইয়াসিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন