ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার আটঘরিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া বাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন- নুর ইসলাম (৫০), মুজিবর এবং মোহাম্মাদ আলী। তাদের সবার বাড়ি আটঘড়িয়া গ্রামে এবং বর্তমানে তারা ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হরিপুর উপজেলার মরাধার গ্রামের ইয়াসিন আলীর সঙ্গে পাশের আটঘরিয়া গ্রামের মো. মাহাতাবের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর ইয়াসিন লোকবল নিয়ে ওই জমি দখলে নেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাহতাব ও তার লোকজন সেই জমি উদ্ধারে সেখানে যান। এ সময় ইয়াসিনের লোকজনের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ান। দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষ এলাকার বাড়িতে বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১৫ বসতঘরে আগুন দেওয়া।
আগুনে ঘরগুলোর জিনিসপত্র পুড়ে যায়। হামলায় উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরেক ভুক্তভোগী আজিমউদ্দিন জানান, ইয়াসিনের নেতৃত্বে ২০-৩০ জন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুটি গরু নিয়ে যায় ও ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সব কিছু পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকি কোরআন শরিফও পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক সহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে হরিপুর ও রাণীশংকৈল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আটঘুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, জমি বিরোধের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিরীহ সাধারণ লোকজনের বাড়িতে কেন হামলা করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে লুটপাট করা হলো এর সঠিক তদন্ত করে আইন অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং কাদের ইন্ধনে এই হামলা চালানো হলো তা উদঘাটন করতে হবে।
হরিপুর থানার ওসি মো. জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন