যশোরের অভয়নগরে গরুর খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে নিখোঁজের ৩৩ ঘণ্টা পর প্রতিবেশীর সেপটিক ট্যাংক থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার করা সেই মরদেহের ভিসেরা প্রতিবেদন প্রায় পাঁচ মাস পর হাতে পেয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের দেবপাড়া এলাকায় গৃহবধূ সবিতা রাণী দে’র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। সম্প্রতি সেই ভিসেরার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের একদিন পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ সবিতা রাণী দে’র স্বামী মিলন কুমার দে বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তার প্রতিবেশী ভাটপাড়া গ্রামের দেবপাড়া এলাকার নিয়ামুল শেখ (২৬), তার বাবা রমজান শেখ (৪৯) ও চাচা ইউনুস শেখের (৪১) নাম উল্লেখ করেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তারও করে। তিনজনের মধ্যে নিয়ামুল শেখ কারাগারে আছেন। অন্য দুজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে গরুর খাবার সংগ্রহ করতে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে যান ওই গৃহবধূ। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে না এলে পরিবার ও প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর (নিখোঁজের প্রায় ৩৩ ঘণ্টা) সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশে বাঁশবাগান সংলগ্ন নিয়ামুল শেখের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা কিছুটা উঁচু দেখা যায়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা উঁচু করলে একটি হাত দেখা যায়। খবর পেয়ে উপজেলার ভাটপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গিয়ে ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী জানান, ওই গৃহবধূর স্বামী সিঙ্গারা, পুরি ও চায়ের দোকানি। স্থানীয় ভাটপাড়া বাজারে তার দোকান রয়েছে। তাদের দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দুজনে থাকতেন।
পুলিশ বলছে, সম্প্রতি ওই গৃহবধূর মরদেহের ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তাতে ওই গৃহবধূর (নারী) শরীরে ধর্ষণের চিহ্ন রয়েছে। শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, ওই গৃহবধূর মরদেহের ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন