নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ইয়াছিনকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকার খলিল হাজির বাড়ির সামনে মাটিচাপা অবস্থায় মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকার মৃত আব্দুস ছামাদের মেয়ে স্বপ্না আক্তার (৩৫), লামিয়া আক্তার (২২) ও লামিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ হাবিব (৪)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দেড়টার দিকে খলিল হাজীর বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে মাটিচাপা অবস্থায় নিচ থেকে মানুষের একটি হাতের কিছু অংশ দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। তখন থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে মাটি খুঁড়তেই একে একে বের হয়ে আসে খণ্ডবিখণ্ড তিনজনের মরদেহ। স্বপ্না আক্তার ও লামিয়ার মাথা এবং হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল আর শিশু হাবিবের লাশ খণ্ডিত ছিল না। তবে তিনটি লাশই ছিল বস্তাবন্দি।
নিহতের বোন মুনমুন আক্তার জানান, একই এলাকার ইয়াছিনের সঙ্গে লামিয়ার বিয়ে হয়। ইয়াছিন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা খলিল হাজির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। লামিয়া কাজ করতেন একটি পোশাক কারখানায়। স্বপ্না আক্তার প্রতিবন্ধী ও স্বামী পরিত্যক্তা। ফলে স্বপ্না তার ছোট বোন লামিয়ার বাসাতে থাকতেন। কি কারণে ইয়াছিন স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
তিনি আরও জানান, একই এলাকায় তাদের নিজস্ব বাড়ি ছিল। বাবার মৃত্যুর পর তারা বাড়িটি বিক্রি করে দেয়। ঈদের আগে বাড়ি বিক্রির ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে। এ টাকা কোথায় কীভাবে খরচ করা হয়েছে এ নিয়ে লামিয়ার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। স্বপ্নার স্বামী না থাকা ও প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার অংশের টাকাও ইয়াছিনের কাছেই ছিল। ইয়াছিনের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে। মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে ছিল। কিছু দিন আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে গত ৪ দিন আগে নিজের ভাড়াবাসায়। পরে দুজনের লাশ খণ্ডবিখণ্ড করে বাড়ির সামনে অন্য একটি বাড়ির দেওয়ালের পাশে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন তাদের হত্যা করেছে। ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, খণ্ডবিখণ্ড তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
মন্তব্য করুন