নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে এক নারীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে জাকারিয়া হোসেন (৩০) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে জাকারিয়া নামের একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার কুমারখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত জাকারিয়া উপজেলার বিয়াঘাট এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। তিনি কুমারখালী এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে কৃষিকাজ করেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে এক নারী কুমারখালি মাঠের পুকুরে শামুক কুড়াতে যান। এ সময় একা পেয়ে জাকারিয়া তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জাকারিয়া ওই নারীকে জোরপূর্বক জাপটে ধরে পাশের ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা করলে মেয়েটি বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকারিয়ার হাতে থাকা কাঁচি দিয়ে নারীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী রক্তাক্ত শরীর নিয়ে মাঠের পাশেই এক বাড়ির উঠানে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. রাজিব হোসেন কালবেলাকে বলেন, ওই নারীর দুই হাত, গলা, কানের নিচেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত গৃহবধূর স্বামী কালবেলাকে বলেন, আহত স্ত্রীকে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলাম। স্ত্রীর পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের কঠিন বিচার দাবি করছি। প্রশাসনের কাছে অভিযুক্ত জাকারিয়াকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সুজাউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, লম্পট জাকারিয়া অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছেন। এর আগেও এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তিনি পলাতক থাকায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তার স্ত্রী শিল্পী বেগম কালবেলাকে বলেন, নারী হিসেবে অপর নারীর সঙ্গে আমার স্বামীর অশুভ আচরণ মেনে নেব না। তিনি দোষী হলে স্ত্রী হিসেবে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে জাকারিয়া নামে এক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে পুলিশের দুটি দল মাঠে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন