গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদ এবং নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে খুলনা মহানগর বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংহতি র্যালি-পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও নির্যাতনের প্রশ্নে মুসলিম বিশ্ব মোড়লদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মানুষের নাম ফিলিস্তিনের জনগণ। মুসলিম বিশ্বের নীরবতার কারণে সারা পৃথিবীতে মুসলিম জনগণ গণহত্যার শিকার হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করছে, এক এক করে সব মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করবে, ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। আজ যারা বিশ্বের মুসলিম মোড়ল আছে, তারা তাদের রাজত্ব টিকে রাখতে নেতৃত্বে আসছে না, এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না তাদের প্রতি ধ্বংস নেমে আসবে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) খুলনা বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ ইসরায়েলকে পরোক্ষভাবে মদদ দিয়েছিল। এমন একটি রাষ্ট্র থেকে আঁড়িপাতার যন্ত্র কিনে এ দেশের বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ইসরায়েলের কারণে ফিলিস্তিনের জনগণ গণহত্যার শিকার হচ্ছে যুগের পর যুগ, দশকের পর দশক কিন্তু তার কোনো প্রতিকার আমরা দেখছি না।
ফিলিস্তিনি জনগণ নিজ দেশে পরবাসী হয়ে গেছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ ১৯৪৮ সালের পর থেকে তীব্রভাবে ইসরায়েলি হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের কিছু পরাশক্তির সমর্থনে ইসরায়েলে যে গণহত্যা শুরু হয়েছে তা আজকে নয় বহুদিন আগে থেকে। ফিলিস্তিনের রাফাহ ও গাজায় ইসরায়েল হামলা, গণহত্যা চালালেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। এমনকি সুশীল সমাজেরও কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। বিএনপি বরাবরই মানবতার পক্ষে। অন্যায়ের বিপক্ষে। ইসরাইলিরা একটি অভিশপ্ত জাতি। যারা নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও অতিক্রম করেছে। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি।
বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলকে বিচারের মুখোমুখি করতে এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ। ইসরাইলের রক্তপিপাসু নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এখন শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি মুসলমান এবং মানুষ হিসেবে সকলের কর্তব্য। আমরা বাংলাদেশ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, ফিলিস্তিনে আর কোনো বোমা পড়লে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, ফকরুল আলম, সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শাসনতন্ত্র বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ, বেলাল হোসেন, শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, সৈয়দা রেহেনা ঈসা প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা, নৃশংসতা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে খুলনা মহানগর বিএনপি প্রতিবাদী র্যালি শুরু করে শিববাড়ি (জিয়াহল চত্বর), যশোর রোড, ফেরিঘাট, খানজাহান আলী রোড হয়ে রয়্যাল চত্বরে গিয়ে পথসভার মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন