ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের এক বাদাম ক্ষেতে আনু নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে গৃহবধূর স্বামী একরামুলকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের খেরবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আটক একরামুল খেরবাড়ী গ্রামের ইয়াজদ্দিনের ছেলে। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সালেহ বলেন, আমি যতদূর জেনেছি রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ ঘটনা পর রাতে নিখোঁজ হয় গৃহবধূ আনু। সকালে তার স্বামীর বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বাদাম ক্ষেতে মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেয়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াজউদ্দিন বলেন, এ দম্পতির ২০-২৫ বছর আগে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঝগড়া লেগেই থাকত। বিভিন্ন অজুহাতে স্ত্রীকে মারধর করত একরামুল। গৃহবধূর শাশুড়িও নির্যাতন করত। আজ ঘটনাস্থলে এসে যেটা শুনলাম রাতে গৃহবধূর স্বামী তাকে পাশবিক ও মানবিক নির্যাতন করে। পরে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বাদাম খেতে স্ত্রীকে ফেলে আসে। পরে সকালে কৌশলে স্ত্রীর মরদেহ গুম করার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা দেখে ফেললে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদহ উদ্ধার করে এবং তার স্বামীকে আটক করে।
নিহতের ভাই রেসেবুল বলেন, ২৫ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে আনুর সঙ্গে একরামুলের বিয়ে হয়। আমরা সম্পর্কটি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আমার বোনের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। তার স্বামী একরামুল, শাশুড়ি ও একরামুলের দুলাভাই প্রায়ই তাকে মারধর করত। এসব ঘটনা নিয়ে গ্রামে দুবার সালিশ হলেও তারা থামেনি। আমার বোন সব সহ্য করে সংসার চালিয়েছিল সন্তানদের মুখ চেয়ে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। আমরা এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই এবং খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা। যেহেতেু পারিবারিক কলহের জেরে নিহতের স্বামী একরামুল মারধর করেছিল সেই সন্দেহ থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করলে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মন্তব্য করুন