কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মানিকদীতে আমির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মাদক মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক ডিবি কর্মকর্তাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে ভৈরবের মানিকদীর নতুন বাজারের দোকান থেকে তুলে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন, কনস্টেবল ইসমাইলসহ ৭/৮ জনের একটি দল আমির হোসেনের মুদি দোকানে যায়। এসআই দেলোয়ার দোকানে জ্বালানি তেল আছে কিনা জানতে চায়। পরে কনস্টেবল ইসমাইলসহ আরও দুজন আমির হোসেনকে তাদের সঙ্গে যেতে বলে। আমির হোসেন যেতে না চাইলে তার বুকে শটগান ঠেকিয়ে জোর করে একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। পরে অটোরিকশা থেকে মাইক্রোতে তুলে নিয়ে কুলিয়ারচর ও ভৈরবের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে এসআই দেলোয়ার ও ইসমাইল মারধর করে এবং ১ হাজার পিচ ইয়াবা দিয়ে মামলায় চালান দিবে বলে ভয় দেখায়। পরে আমির হোসেনের নম্বর থেকে তার বাড়িতে ফোন করে তার আত্মীয় জামাল মিয়ার মাধ্যমে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার দিয়ে মুক্তি পায়।
ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী আমির হোসেন বলেন, দোকানে বসে দোকানদারি করছিলাম। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ডিবির এসআই দেলোয়ার ও কনস্টেবল ইসমাইলসহ তিনজন এসে আমাকে বলে তাদের সঙ্গে যেতে হবে। আমি কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে বুকে শটগান ঠেকিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, তাদের গাড়িতে তুলে ৫ ঘণ্টা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে আমাকে মারধর করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না চাইলে আমাকে এক হাজার পিচ ইয়াবা দিয়ে মামলা দিবে বলে ভয় দেখায়। পরে ধার করে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের বিচার চাই।
ভুক্তভোগীর আত্মীয় জামাল মিয়া বলেন, ঘটনা সত্য। আমি নিজে এসআই দেলোয়ার ও কনস্টেবল ইসমাইলকে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে আমির হোসেনকে ছাড়িয়ে এনেছি।
এ ব্যাপারে জানতে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আজিজ আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ সুপার তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসান চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন