বগুড়ার শেরপুরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে জামায়াতের এক কর্মীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে নিহতের লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তারা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে নিহত ওই জামায়াত কর্মীর সন্ধান পান নিহতের পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী (বস্তিপাড়া) গ্রামে।
নিহত কাবিল উদ্দিন (৩৯) গোসাইবাড়ী (বস্তিপাড়া) গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় ওয়ার্ডের একজন কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ নামক স্থানে অনুষ্ঠিত গ্রামীণ মেলায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরেননি। তবে ওই রাত ১০টা পর্যন্ত তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়। এ সময় প্রতিবেশী সজিব নামের এক যুবক তাকে দেখা করার জন্য মোবাইলে ডাকেন। তার সঙ্গে দেখা করেই বাড়ি ফিরবেন বলে স্ত্রীকে জানান। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফিরেননি।
নিহতের স্ত্রী শাপলা খাতুন বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকেই তার স্বামীকে স্বজনদের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু কোনো সন্ধান মেলেনি। একপর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাশের সন্ধান পান। এরপর জানতে পারেন, ঘটনার রাত তিনটার দিকে প্রতিবেশী সজিব (সম্পর্কে দেবর) তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় সে। এতেই প্রমাণিত হয় সজিব ও তার সহযোগীরা স্বামী কাবিলকে হত্যা করেছে- বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু কেন তাকে খুন করা হয়েছে- সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।
উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল করিম বাবলু বলেন, সম্ভবত অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কাবিল উদ্দিন। আর এই কারণেই পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানান।
শেরপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, কাবিল উদ্দিনকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের লাশ বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। তবে নিহতের মোটরসাইকেলসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র, রশি ও লোহার রড উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হবে। পাশাপাশি ঘাতকদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন