সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য ছাত্র প্রতিনিধিদের এখন সরকার থেকে পদত্যাগ করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
সোমবার (০৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ব্রাহ্মনবাড়িয়া থেকে ঢাকা ফেরার পথে নরসিংদী ক্লাব মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের নরসিংদীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন।
নুরুল হক বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের সমর্থন আছে। কিন্তু সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে একজন যেহেতু বেরিয়ে একটি দল গঠন করেছে এবং বাকী দুই জন এখনো সরকারে আছে, ইতোমধ্যেই বিএনপিসহ অন্যান্য দল এবং আমরাও বলেছি যে, সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য ছাত্র প্রতিনিধিদের এখন সরকার থেকে পদত্যাগ করা দরকার, যেহেতু তারা একটি দল গঠন করেছে। একদিকে তারা দল গঠন করে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে এবং ব্যবহার করছে, আবার তারা রাজনীতিও করছে, এটা তো সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নিবেনা।
সরকার টিকতে পারবেনা মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারকেও এমন কাজ করা যাবে না, যাতে রাজনৈতিক দলের মধ্যে সন্দেহ সংশয় তৈরি হয়। সরকারের সঙ্গে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সংকট তৈরি হয়, তা হলে কিন্তু সরকার টিকতে পারবে না, সরকার দেশ চালাতে পারবে না। ইতোমধ্যেই আস্থার সংকট কিছুটা তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারকে এ আস্থার সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সাবেক এই ভিপি বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গতানুগতিক রাজনৈতিক দলগুলো কিংবা রাজনীতির বাইরের ছাত্র জনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। কিন্তু নানান কারণে তারা কিন্তু জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। ছাত্র নেতৃবৃন্দ যখন পরিস্কারভাবে ঘোষণা দিয়েছিল ৫ আগস্টের পূর্বে যে, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন রাজনীতির বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং মানুষ এ বিষয়টিতে সারা দিয়েছিল।
নুর আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মানুষের একটি আস্থা, বিশ্বাসের ঘাটতি কিন্তু দীর্ঘ দিনে তৈরি হয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি ৫ আগস্ট শুধু মাত্র ফ্যাসিবাদের পতন হয়নি, পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থার পতন হয়েছে। এই পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশে আগামীতে তরুণদের নেতৃত্বের একটি ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং এই সময়ের তরুণদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের তরুণরা একে বারেই একটি আন্দোলন, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা তিনশত আসনেই প্রার্থী দিতে চাই। মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি বিকল্প নেতৃত্বের প্রত্যাশা করে আসছিল। একটি নতুন রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা করে আসছিল। আমরা সে জায়গাটাতে মানুষকে নিয়ে যেতে চাই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত মানুষের মধ্যেই দলমত নির্বিশেষে রাষ্ট্র সংস্কারের একটি ব্যাপক জন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, দপ্তার সম্পাদক শাকিলুজ্জামানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও গণঅধিকার পরিষদ নরসিংদী জেলার সাবেক সভাপতি নান্নু মিয়া, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন মিয়া, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. জনি ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সুশীল চন্দ্র পাল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি জেমস বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক রবিন আহমেদ, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি ইমরান, সাধারণ সম্পাদক আলামিন, মৌসুমি আক্তার সুমি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন