পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় জেলের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুন্সী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে ঐ জেলেকে পরিবারসহ এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিখিল হাওলাদার (৪৭) রাঙ্গাবালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিখিল হাওলাদার বলেন, আমি মাছ ধরে জীবন চালাই। মাছ ধরার জন্য চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুলকে ১০ হাজার, ইউনিয়ন সেক্রেটারি জাকির মতুব্বরকে ২০ হাজার, নজরুল মুন্সীর খালু হাবিবকে আরও ১৪ হাজার টাকা দিয়েছি। এরপরও মৎস্য দলের সভাপতি মহিউদ্দিন এবং ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি বশির আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আমি না দেওয়ায় এখন আমার বোট মিটার বাজারের কাছে আটকে রেখেছে।
তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে সেক্রেটারি জাকির মাতুব্বরকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছি- আপনাদের টাকা দেওয়ার পরও আমার বোট আটকাল কেন। পরে জাকির মাতুব্বর বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
জানা গেছে, এই ঘটনায় নিখিলের দেওয়া একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হন অভিযুক্তরা। রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে জাকির মাতুব্বরের নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ নিখিলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ সময় ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মহিউদ্দিন হাওলাদার নিখিলকে শাসিয়ে বলেন, ‘এখন তোর কোন নেতায় ঠেকাইবে, বেশি বাড়লে ঘরে অস্ত্র রাইখা মামলা দিয়া দিমু।’
ঐদিন সন্ধ্যায় নিখিল রাঙ্গাবালী থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, অভিযুক্ত সবাই চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এর আগেও অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরার অনুমতি দিতে ১৪ লাখ টাকা বাণিজ্যের ঘটনায় গণমাধ্যমের শিরোনাম হন নজরুল ইসলাম। এ ছাড়াও ৫ আগস্টের পরে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে ইউনিয়ন যুবদল সভাপতিকে মারধর, এডহক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেওয়াসহ নানা বিতর্কিত কাণ্ডে উপজেলাজুড়ে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন এ নেতা।
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে নজরুল ইসলাম বলেন, নিখিল আওয়ামী লীগের লোক। ও এলাকায় বহু ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ওর সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক নেই আমার। ওর কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমারত হোসেন বলেন, নিখিল নামে এক জেলে অভিযোগ করেছেন। ভয়ে মামলা করতে চান না। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।
মন্তব্য করুন