সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাতপুর অঞ্চলে কপোতাক্ষ নদের ৪টি স্থানে বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্ষেতের পাকা ধান ঘরে তোলার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত অতিবাহিত করছেন তারা। খবর পেয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, কপোতাক্ষ নদের ডুমুরিয়া শাহাজাতপুর অংশে ডুমুরিয়ার জুলাপাড়া, শফিকুলের ঘেরের মাথা, গোওলা খেয়াঘাট সংলগ্ন ও শাহাজাতপুরের পুণ্ডলিকপাড়া অঞ্চলে বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ২টি স্থান দিয়ে জোয়ারের সময় ফসলের ক্ষেতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
ডুমুরিয়া গ্রামের আতিয়ার মোড়ল, আসাদুল ইসলাম, রওশন সরদার, মোসলেম মোড়ল, স্কুল শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম, আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ৫ বছর আগে সরকারি অর্থায়নে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় যথাযথ নিয়ম না মেনে যেনতেনভাবে বাঁধ তৈরি করায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এখন সারা বছর খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার একমাত্র ফসল ধান। এখন ধান কাটার মৌসুম। এই বাঁধ ভেঙে লোনা পানি যদি ধানের ক্ষেতে ঢুকে পড়ে তাহলে হাজার হাজার বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা এসএম লিয়াকত হোসেন কালবেলাকে বলেন, কপোতাক্ষ নদের তালার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাতপুর অঞ্চলের ৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে ফসলের জমিতে পানি ঢুকে যেতে পারে। এই বাঁধ ভেঙে গেলে উপজেলার খেশরা, খলিসখালী, মাগুরা ও জালালপুর ইউনিয়নের কিছু অংশ প্লাবিত হবে। এই অঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা পাকা ধান, মাছের ঘের, সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কপোতাক্ষের পানি লোনা হওয়ায় আম-কাঁঠালের গাছসহ অধিকাংশ মারা যেতে পারে। এই অঞ্চলে মাটির বাঁধ দিলে টিকবে না। এই ভাঙন এলাকাগুলো ব্লক তৈরি করে বাঁধ দিলে হয়তো টিকতে পারে। খবর পেয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিদ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল কালবেলাকে বলেন, তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া-শাহাজাতপুর অংশে কপোতাক্ষ নদের ৪টি স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ২ স্থানে দ্রুত সংস্কারের জন্য আশু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন কালবেলাকে বলেন, তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এলাকা পরিদর্শনের জন্য একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন