গাজীপুর সাফারি পার্কের নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। একের পর এক প্রাণী চুরির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। কয়েক মাস আগে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরির পর এবার চুরি হলো তিনটি আফ্রিকান লেমুর।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২২ মার্চ রাতে পার্কে থাকা তিনটি লেমুর—দুটি শাবক ও একটি প্রাপ্তবয়স্ক চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ বা অগ্রগতি দেখা যায়নি।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ম্যাকাও, ময়ুর, দুইটি লেমুরসহ ২০২ জোড়া বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ ও ঢাকা কাস্টমস হাউস।
উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলো পরবর্তীতে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের মাধ্যমে সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। ওই লেমুর জোড়াটি পার্কে প্রথমবারের মতো বাচ্চা দেয়। ২০২২ সালে একটি লেমুর মারা গেলে বাকি তিনটি রয়েছিল পার্কে। সর্বশেষ এই তিনটি লেমুর চুরির ঘটনায় বেষ্টনী এখন পুরোপুরি ফাঁকা।
বন বিভাগের দাবি, বর্তমানে পার্ক থেকে লেমুর চুরির পর দেশের কোথাও আর কোনো লেমুর অবশিষ্ট নেই।
পার্কসংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকেই সাফারি পার্কে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। একের পর এক মূল্যবান প্রাণী চুরির ঘটনায় বন বিভাগের কিছু কর্মচারীর সম্পৃক্ততার সন্দেহ করা হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনো কাউকে জবাবদিহিতার আওতায় আনেনি। গত বছরের নভেম্বরে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরি হয় এবং চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি একটি নীলগাই নিখোঁজ হয়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, পার্ক থেকে তিনটি লেমুর চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং থানায় মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে এ ব্যাপারে সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, লেমুর চুরির ঘটনায় ওই বেস্টনির তত্ত্বাবধায়ক ও ওয়াল্ড লাইফ সুপার ভাইজার আনিসুর রহমান ২৪ মার্চ বাদি হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে পুলিশের টিম এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি। এ ব্যাপারে ওসির সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছে, আমরা নিজেরা আশপাশের সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজ নিয়েছি। তবে চুরি হওয়া লেমুর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন