রংপুরের কাউনিয়ায় ভোগান্তিতে সাত গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। পাঁচ বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে এলাকাবাসী। নদীর বুকে এখন দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি পিলার।
উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ ও ২০২০-২১ এ দুই অর্থবছরে হারাগাছ এডিবির পৌরসভার উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে তিস্তা নদীর ওপর ৭৬ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুবার দরপত্র দিয়েও কাজটি শেষ হয়নি।
মায়ারচর গফফারটারী গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘হামরা হইনো চরের মানুষ। নদীর চরোত আবাদ করি খাই। বিভিন্ন কষ্টে হামাদের দিন কাটে। নদীর ওপরে সেতুটা হইলে আবাদের যে কোনো পণ্য সহজে হামরা জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে গিয়ে (বেছপার পামো) বিক্রি করতে পারব।’
চর পল্লীমারী গ্রামের কৃষক সাগন মিয়া বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য বিভিন্ন বাজারে নিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে কম দামে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।
হারাগাছ পৌরসভার ঠাকুরদাস গ্রামের ৯ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শুনেছি নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমরা চাই অতি দ্রুত সেতুটির কাজ শেষ করে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হোক।
হারাগাছ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. হামিদুর রহমান বলেন, যেহেতু পৌর অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। তাই উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে দুই অর্থবছরে পৃথক দরপত্রের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম দরপত্রে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক অসুস্থ থাকায় সেতুটির ২০ ভাগ কাজ করে কাজ বন্ধ রেখেছে। দ্বিতীয় দরপত্রে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুর এন্টারপ্রাইজকে সেতুর বাকি কাজ শুরু করার তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। এখনো কিছু পরিমাণ অর্থ আমাদের কাছে আছে কিন্তু পুরোপুরি কাজ শেষ করতে আরও প্রায় ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা তাগিদ ও চাহিদা দিয়েছি। টাকা পাওয়া মাত্রই সেতুটির বাকি কাজ শেষ করতে পারব।
হারাগাছ পৌরসভার প্রশাসক মো. লোকমান হোসেন জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। কিন্তু সেতুটি নির্মাণ করতে যে অর্থের প্রয়েজন সেই পরিমাণ অর্থ পৌরসভার কাছে নাই। আবার আংশিকভাবে দুবার প্রকল্প দেওয়ার কারণে নতুন করে প্রকল্পও দেওয়া যাচ্ছে না। তার পরেও আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সেতুটির কাজ শেষ করা যায়। দ্বিতীয় দরপত্রের কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যদি দ্রুত কাজ শুরু না করে তাহলে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার আহব্বান করা হবে।
মন্তব্য করুন