শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুরে আধিপত্য বিস্তারের জেরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতবোমার বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রোববার (৬ এপ্রিল) জাজিরা থানার ওসি মুহাম্মদ দুলাল আকন্দ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জলিল মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে। শনিবার সকালে কাজিয়ারচর এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
আরও জানা গেছে, এ সময় বাড়িঘর ভাঙচুরসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে একজনের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ ও যৌথবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রোববার সকালে জাজিরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় কুমার দাস বাদী হয়ে দুপক্ষের ৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ এক হাজারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে জাজিরা থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব-৮।
র্যাব-৮ মাদারীপুরের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মো. মনির হোসেন বলেন, র্যাব-৮ ও র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে ঢাকার মোমিনবাগ এলাকা থেকে দিবাগত রাত ১টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এই মুহূর্তে র্যাবের হেফাজতে রয়েছেন।
জাজিরা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ কালবেলাকে বলেন, বিলাসপুরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জাজিরা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। ইতোমধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। যদি কেউ নাশকতার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর পুলিশ জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারি ও বিলাসপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল মাদবরকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলাকাবাসীর মাঝে। তবে সম্প্রতি কুদ্দুস বেপারি করে জামিনে মুক্তি পান। তার মুক্তির পর থেকেই এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপরে শনিবার সকালে কুদ্দুস বেপারির সমর্থকরা জলিল মাদবরের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ককটেল নিক্ষেপ করে। পাল্টা প্রতিরোধে জলিল মাদবরের সমর্থকরাও সংঘর্ষে জড়ায়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় পাঁচ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।
মন্তব্য করুন