বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঈদের একদিন আগে একসঙ্গে ৩ ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা

বরগুনার পাথরঘাটায় তিন সন্তানের কবরের পাশে বাবা। ছবি : কালবেলা
বরগুনার পাথরঘাটায় তিন সন্তানের কবরের পাশে বাবা। ছবি : কালবেলা

নাসির উদ্দিন ও শিউলি আক্তার দম্পতির বাড়িতে ঈদের দিনেও চলছে আহাজারি। বাড়ির সদস্যরা তো বটেই, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী যারা এসেছেন, তারাও কাঁদছেন। এই বাড়ির তিন সন্তান শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল পৌনে ৮টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সোনার বাংলা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।

ঈদের একদিন আগে একসঙ্গে ৩ ছেলের মৃত্যুতে পাগলপ্রায় মা-বাবা। মা শিউলি আক্তার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সন্তান হারানোর কষ্টে।

নাসির উদ্দিন শ্রমিকের কাজ করেন রাঙামাটি। তিন ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে সেখান থেকে এসে ছেলেদের হারানোর কষ্টের কথা বলছিলেন, আর হাউমাউ করে কাঁদছিলেন।

নিহত তিন ভাই হলেন- মো. নাঈমুজ্জামান খান শুভ, মো. শান্ত খান ও মো. নাদিম খান। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশকুরা ইউনিয়নের টিকিকাটা গ্রামে তাদের বাড়ি। দুর্ঘটনার পরপরই তিন ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। তারপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, শুভ ঢাকার সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত। তার ছোট ভাই শান্ত গুলশাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং নাদিম গুলশাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত বছর সাত মাস বয়সী তাদের আরেক ভাই পানিতে ডুবে মারা গেছে। ফলে একই পরিবারের চার ভাইয়ের কেউ আর রইলো না।

শুভ মাত্র চার দিনের ছুটি পেয়ে ঈদ করতে এসেছিল বাড়িতে। তবে তার সহকর্মী বন্ধু রাকিব ঈদে ছুটি পাননি। শুভ ঢাকা থেকে আসার সময় রাকিব নিজের পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনা নতুন পোশাক শুভকে দিয়েছিলেন পৌঁছে দেওয়ার জন্য। রাকিবের বাড়ি পাশের পাথরঘাটা উপজেলার মানিকখালী গ্রামে।

নিহতদের দাদি মনোয়ার বেগম কালবেলাকে বলেন, আমার নাতি শুভ প্রতি বছরের মতো নতুন শাড়ি আমার জন্য নিয়ে এসেছে। ঈদের দিন ঠিকই নতুন শাড়ি পড়েছি কিন্তু আমার নাতি নেই। এমনটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন তিনি।

বাবা নাসির উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, আমার জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমার মতো হতভাগা আর কে আছে। আজকে একসঙ্গে আমার তিন ছেলে মারা গেল, গত বছর আমার ছোট ছেলে (৭ মাস) পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমার জীবনের কী অপরাধ ছিল জানি না। আমার চার ছেলের কেউ আজকে নেই।

নিহত শুভর স্ত্রী সূচনা আক্তার জানান, তার সঙ্গে এতটাই ভালো সম্পর্ক ছিল যেটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। কোনো দিন তাকে ছাড়া ঈদ করেননি। কেউ কিছু খাবার দিলেও সেটা তার জন্য বাড়িতে নিয়ে আসত।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাতসকালে ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’

দক্ষিন চীন সাগরে নতুন তেলের খনি আবিষ্কার

লক্ষ্মীপুরে ৬ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ

মার্কিন-রুশ সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে দ্বিতীয় বৈঠকের ভেন্যু নির্ধারণ

গাজায় নিহত আরও ৪২ ফিলিস্তিনি

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

০২ এপ্রিল : আজকের নামাজের সময়সূচি

০২ এপ্রিল : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

তারেক রহমানের উপহার পেলেন শহীদ আইয়ুবের পরিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ

১০

স্বামীর কবর দেখতে গিয়ে ‘মারধরের’ শিকার জুলাই শহীদের স্ত্রী

১১

বিএনপি কারও কাছে মাথা নত করেনি, করবে না : এ্যানি

১২

ঈদে মামা বাড়ি বেড়াতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

১৩

‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রই আর টিকবে না’

১৪

চাঁদপুরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ

১৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

১৬

ঈদ মিছিল নিয়ে হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি

১৭

সিলেটে মধ্যরাতে বিএনপি-যুবদল সংঘর্ষ

১৮

প্রতারণার শিকার জবি শিক্ষার্থীর পাশে ছাত্রদল নেতা

১৯

৩২ শহীদ পরিবারের সঙ্গে জামায়াত আমিরের ঈদ উদযাপন

২০
X