লামনিরহাট জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শহরের বিডিআর রোডে শিশু পার্কসংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এটি ভাঙার কাজ করেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের নির্দেশে তারা ম্যুরালটি ভাঙেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। কয়েকবার কল কেটেও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন জেলা প্রশাসক। তখন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেছিলেন, ‘অনেকের আপত্তির কারণে ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।’
এ নিয়ে গত ২৭ মার্চ প্রতিবাদ ও তীব্র ঘৃণা জানায় সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)।
২৯ মার্চ জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি বলেন, দেশে অনেক কিছুই ঘটছে। আমাকে সংবাদ সম্মেলন করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের বার্তা একটাই, আমরা ’৫২, ’৭১-কে ২৪-এর মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না।’
সেদিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে ম্যুরালটির বিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়।
ম্যুরালে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকার গঠন, চরমপত্র পাঠ, উদিত সূর্য, ৭১-এর গণহত্যা, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, বিজয়ে উল্লাসে মুক্তিযোদ্ধারা, পতাকা হাতে হাতে বিজয়ে উচ্ছ্বসিত জনতা, ৭ বীরশ্রেষ্ঠ ও পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অতিক্রমের আহ্বায়ক সাংবাদিক হেলাল কবির বলেন, ম্যুরালটি ভাঙা হচ্ছে ডিসির নির্দেশে। ঢেকেও রেখে হয়েছিল তার নির্দেশে।
টিআইবির কো-অর্ডিনেটর মোরশেদ আলম বলেন, আমি এখন ছুটিতে দেশের বাড়িতে আছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। সনাকের সভাপতিও অসুস্থ। আমরা সবাই একসঙ্গে বসে বিষয়টি কথা বলে জানাব।
মন্তব্য করুন