মাত্র পাঁচ টাকায় ঈদের বাজার করতে পেরে খুশি ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচ শতাধিক পরিবার। শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে স্থানীয় মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সহায় জুলুমবস্তি’ এই ঈদ বাজারের আয়োজন করে।
বাজার করতে আসা জরিনা বেগম বলেন, আমার পরিবারে পাঁচজন সদস্য। স্বামী ও সন্তান দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। ঠিকমতো খেতেও পারি না। ঈদের জন্য আলাদা বাজার করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু জুলুমবস্তির এই পাঁচ টাকার বাজারের জন্য এবার ভালো খাবার খেতে পারব।
ঈদ বাজার থেকে সহায়তা নেওয়া মো. রিপন বলেন, আমি আজ অনেক খুশি। ভাবছিলাম এবার সন্তানদের একটু সেমাই খাওয়াতে পারব না। কিন্তু এই সহায়তার ফলে শুধু সেমাই নয়, পোলাও-মাংসও খাওয়াতে পারব।
সহায়তা পাওয়া আরও এক সুবিধাভোগী রহিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী একজন রিকশাচালক। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। ঈদের জন্য আলাদা কিছু কেনার সামর্থ্য ছিল না। এই পাঁচ টাকার বাজার আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
৫ টাকার এই ঈদ বাজারে ছিল- ১টি মুরগি, ১ কেজি পোলাওর চাল, দুধের প্যাকেট, সেমাই, চিনি, বিস্কুটের প্যাকেট ও সয়াবিন তেল।
সংগঠনের সভাপতি ফখরুল আলম লিফাত বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোকে ঈদের আনন্দ দিতে সহায়তা করা। এই বাজারের মাধ্যমে অন্তত পাঁচশ পরিবার কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন সাগর বলেন, আমাদের এই কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আরও বেশি পরিবারকে সহায়তা করা সম্ভব হবে।
জুলুমবস্তি সহায়-এর প্রধান উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম শরীফ বলেন, আমরা চাই সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়াক। তবেই আরও বেশি মানুষের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব হবে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এমন মানবিক কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। সংগঠনটি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব। এ ধরনের আয়োজন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
ঈদ বাজার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সমাজসেবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন আয়োজকরা।
মন্তব্য করুন