স্ত্রী ও তিন বছরের একমাত্র সন্তান আহনাফ ইব্রাহীমকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়ায় এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আব্দুল কাদের ঈদের ছুটিতে মোটরসাইকেলযোগে ফিরছিলেন নিজ জেলা কুষ্টিয়ায়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সেহরি খেয়ে বগুড়া থেকে রওনা দেন। কিন্তু নিজ শহর কুষ্টিয়ার প্রবেশমুখে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা তাদের সেই উদ্দেশ্য বিষাদে পরিণত হয়।
আব্দুল কাদের প্রাণে বেঁচে গেলেও অনন্তকালের ছুটিতে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন তার স্ত্রী ইতি খাতুন ও একমাত্র সন্তান আহনাফ ইব্রাহীম। নিজ চোখেই কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কে বালুবোঝায় ট্রাকের চাপায় মর্মান্তিক মৃত্যু দেখলেন আব্দুল কাদের।
মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান স্ত্রী ইতি খাতুন ও একমাত্র ছেলে সন্তান আহনাফ ইব্রাহীম। গুরুতর আহত হন আব্দুল কাদের নিজেও। আব্দুর কাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়ার আড়াইশ শয্যার হাসপাতাল বেডে চিকিৎসাধীন থাকলেও স্ত্রী ও তার একমাত্র সন্তানের ঠাঁই হয় হাসপাতাল মর্গে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরতলীর বাইপাস সড়কের ত্রিমোহনী গোলচত্বরে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। হতাহতদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া গোশালা এলাকায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বগুড়ায় একটি ফিড কোম্পানিতে কর্মরত আব্দুল কাদের ঈদের ছুটিতে বগুড়া থেকে মোটরসাইকেল যোগে শুক্রবার ভোরে নিজ জেলা কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন স্ত্রী ইতি খাতুন (৩০) ও ছেলে আহনাফকে (৩) সঙ্গে নিয়ে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরতলীর বারখাদা ত্রিমোহনী এলাকার বাইপাস সড়কের প্রবেশ মুখে পৌঁছলে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গোলচত্বরে রেলিংয়ে ধাক্কা লাগে। এতে মায়ের কোলে থাকা আড়াই বছরের ছোট্ট শিশু আহনাফ ইব্রাহীম, মা ইতি খাতুন ও বাবা আব্দুর কাদের সড়কে ছিটকে পড়েন।
এ সময় একই দিক থেকে ছেড়ে আসা বালুবোঝাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান স্ত্রী ইতি খাতুন ও ৩ বছরের ছেলে আহনাফ ইব্রাহীম। গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল কাদের কুষ্টিয়ার আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি সৈয়দ আল মামুন কালবেলাকে জানান, কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কে বালুবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মা ও ছেলে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আব্দুল কাদের নামে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন। তিনি শিশু ইব্রাহীমের বাবা। তবে ট্রাকটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
এদিকে মর্মান্তিক ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও ছেলের করুণ মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে।
মন্তব্য করুন