পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী মোস্তফা কামাল চাঁন বলেছেন, আমাদের মিছিলে কোনো সাংবাদিক লাগবে না, কোনো সাংবাদিকের প্রয়োজন নেই!
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের সামনে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলা মুক্তিযোদ্ধা মো. কাজী সাখাওয়াত হোসেনের বিচার দাবিতে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময়ে তিনি আরও বলেন, দুঃসময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশে কেউ ছিল না। এখন কিছু দালাল সাংবাদিক দলে ঢোকার চেষ্টা করছে। কোনো দালাল সাংবাদিক বিএনপির মিটিং ও মিছিলে আসতে পারবে না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে পৌর বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল চাঁনের এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন নেছারাবাদ উপজেলার সব সাংবাদিক সমাজ ও স্বরূপকাঠি প্রেস ক্লাবের সদস্য ও সাংবাদিকরা। এমনকি তার বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছেন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল চাঁন বলেন, নেছারাবাদে স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধা মো. সাখাওয়াত হোসেন ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেছে। তার প্রতিবাদে আমরা বৃহস্পতিবার সকালে থানার সামনে জড়ো হয়ে তার বিচার দাবিতে বক্তব্যে রাখছিলাম। তখন স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা নামে এক লোক এসেই আমাদের সামনে অঘোষিত বক্তব্য দেয়। তিনি বক্তব্য দিয়েই চলে যান। পরে আমরা বক্তব্য রাখলেও মোস্তফা সাংবাদিক আমাদের কভারেজ দেয়নি। তাই আমি এ কথা বলেছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, বুধবার (২৬ মার্চ) ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে সাংবাদিকরা নিউজ করে। এই স্লোগান দেওয়ায় আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। একটি রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী মহল এটাকে পুঁজি করে অন্যদিকে ধাবিত করার চেষ্টা করছে। তাছাড়া আমার বক্তৃতা দেওয়ার আগে দুজনে বক্তৃতা দিয়েছিল। আমি তাদের অনুমতি নিয়েই গতকালের (২৬ মার্চ) বিষয়টি পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম। ইতোমধ্যে একটি রাজনৈতিক মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি একজন সাংবাদিক ও লেখক। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সব রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে চলতে হয়। ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার স্বরচিত লেখা একটি বই বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সুশীল সমাজের শ্রেণি পেশার মানুষদের উপহার দেই সেটা আপলোড দিয়ে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা হয়তোবা আমার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগত নই।
এ বিষয়ে স্বরূপকাঠি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুহিদুল ইসলাম মুহিদ বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সম্মুখে প্রকাশ্যে এই ধরনের বক্তব্য দেওয়াটা লজ্জাজনক। বিষয়টি নিয়ে প্রেসক্লাবে জরুরি মিটিং ডেকেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, তিনি যে কথাটি বলেছেন সেই সময়ে আমি সেখানে ছিলাম না। তবে শুনেছি। তিনি সাংবাদিকদের খাটো করে কেন এমন কথা বলেছেন তা আমি জানতে চাইব।
মন্তব্য করুন