লক্ষ্মীপুরে বেআইনিভাবে তিনতলা বাণিজ্যিক ভবনসহ ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে তাদের লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
এর আগে, বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে তাদের লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মধ্য বাঞ্ছানগর এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
বুধবার রাতে কালবেলা অনলাইনে ‘ভবনসহ ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করলেন ব্যবসায়ী আনোয়ার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
জানা গেছে, বুধবার বহিরাগত লোকজন নিয়ে শহরের মধ্য বাঞ্ছানগর এলাকায় সেন্ট মার্টিন কমিউনিটি সেন্টারের ভবনটিতে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী আনোয়ার তার প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। পরে ভবনের সামনে ১০টি ট্রাক ও ড্রাম্প ট্রাক রেখে সামনের অংশ দখল করে রাখে। পরে রাতেই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. মাঈন উদ্দিন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় আনোয়ারসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী আনোয়ার রায়পুর উপজেলা বামনী গ্রামের বাসিন্দা ও আনোয়ার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- তামিম হোসেন, লিটন হোসেন, ফরহাদ হোসেন, মো. মামুন, বেল্লাল হোসেন, মানিক হোসেন আব্দুল আজিজ রাব্বিসহ ৪০ জন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জমির মালিক মাঈন উদ্দিন একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ওই জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ নেয়। ধারদেনায় পড়ে তিনি জমিটি বিক্রির জন্য আনোয়ারের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা মূল্য নির্ধারণ করে। এতে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না চুক্তি করা হয়। ব্যাংকের জটিলতা শেষ করে আনোয়ারকে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্যাংকের সমস্যা সমাধান হয়নি। এরমধ্যেই জমিটি দখলে নিতে আনোয়ার অবৈধভাবে পাঁয়তারা করে আসছিল। জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না হলেও তা রেজিস্ট্রি ছিল না। বায়নার সময় ২৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে মাঈন উদ্দিন লভ্যাংশ হিসেবে টাকা ফেরত দিতে চাইলে আনোয়ার নেয়নি।
জমির মালিক মাঈন উদ্দিন বলেন, অবৈধভাবে ভাড়াটে ক্যাডারদের এনে আনোয়ার আমার সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার ভবনে সেন্টমার্টিন রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড ছিল, তিনি তা সরিয়ে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।
ভবন দখলের পর বুধবার আনোয়ার হোসেন বলেন, ৯ মাস আগে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনার জন্য মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি আমাকে ভবনসহ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৪ কোটি টাকা আমার ব্যাংকে পড়ে আছে। তা আমি উত্তোলন করতে পারছি না। চুক্তির ভিত্তিতেই আমি ভবনসহ জমি দখল করেছি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ভবন দখলের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন