বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জে ধর্মঘট পালন করছে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা।
বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোম্পানীগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী তিশা ও গোমতী, চট্টগ্রামগামী প্রান্তিক, হানিফ, বিআরটিসি, কুমিল্লাগামী বাস রয়েল সুপার, ফারজানা, সুগন্ধা, ফারহানা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারসহ সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পরিবহন শ্রমিক আল আমিন বলেন, আমরা শ্রমিক মানুষ, আমরা পরিশ্রম করে সংসার চালাই। মিথ্যা অভিযোগে আটককরা শ্রমিকদের মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আমাদের শ্রমিকদের কাজের ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে। নাহলে আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।
বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে রয়েল সুপারের মালিক জহির খান বলেন, সোমবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্টেশনে গাড়ির সিরিয়াল নিয়ে সৃষ্ট ঘটনা নিয়ে থানায় একটি অন্যায় ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে মুরাদনগর থানা পুলিশ বেশকিছু শ্রমিককে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করে এবং শ্রমিকদের ওপর মামলা দিয়ে হয়রানি করছে এই প্রতিবাদে শ্রমিকরা ধর্মঘট করছে। আমরা গাড়ির মালিক, কিন্তু গাড়িতো চালায় শ্রমিকরা। আমরা মালিকপক্ষ তাদের অনেক বুঝিয়েছি যে এখন ঈদের সময়, গাড়ি বন্ধ করলে মানুষের দুভোর্গ হবে। তবুও তারা তাদের ওপর পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে আজ বুধবার অর্ধবেলা ধর্মঘট করেছে।
কোম্পানীগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক হাজি ইদ্রিস বলেন, সিএনজির সিরিয়াল নিয়ে করা একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় শ্রমিকদের ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। আমরা থানায় যাওয়ার পর ওসির রুমের সামনে থেকে সমন্বয়ক পরিচয়ে ছাত্রলীগ নেতা আমাদের বিভিন্নভাবে গালাগাল ও হুমকি দিতে থাকে, আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছি মাত্র। থানায় কোনো হামলা করা হয়নি। অথচ এই প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মালিক শ্রমিকদের ওপর দায়ের করা হয় ২টি মিথ্যা মামলা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে কিন্তু তাদের দোসররা আজও ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৬ঘন্টা ধর্মঘট চলছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস স্টেশন থেকে সকল যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদি অনতিবিলম্বে পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে সমস্ত মুরাদনগর উপজেলা ও কুমিল্লা জেলাসহ আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধের খবর পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন