একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ।
বুধবার (২৬ মার্চ) ভোরে নগরীর উত্তর কাট্টলীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুলিশের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শন করার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এরপর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে একে একে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম। জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করা হয়। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সব শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে চাই। সব শ্রেণির নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ ও ২০২৪ নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্কে যাওয়া উচিত হবে না। একটিকে দিয়ে অন্যটি ঢেকে দেওয়া যাবে না।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ২০২৪ ও ১৯৭১ একই সূত্রে গাঁথা। একাত্তরে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে অধিকার আদায়ের জন্য, ঠিক তেমনি ২০২৪ সালেও অধিকার আদায়ের জন্যই হাজারের ওপর ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে। সুতরাং আমরা একাত্তরকে ভুলব না, একাত্তরের চেতনা নিয়ে ২০২৪ কে নেতৃত্ব দেব।
এদিন পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজ, আলোচনা, গান-কবিতাসহ নানা আয়োজনে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দেওয়া বীর সন্তানদের স্মরণ করছে বন্দরনগরী।
এদিন শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্কসবাদী), ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
মন্তব্য করুন