পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় জমি ও বালুর ব্যবসার বিরোধের জেরে কুপিয়ে আবুল বাশার রুবেল নামে একজনের পা বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিপক্ষরা। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাদের হামলায় নিহত হয়েছেন আরেক ভাই আবু সালেহ।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পাতলাখালী গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবু সালেহ (৩৭) পাতলাখালী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে। নিহতের ভাই গুরুতর আহত আবুল বাশার রুবেলকে (২৭) আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত আবু সালেহের বোন আফসানা মিমি বলেন, রাত আড়াইটার দিকে আমার চাচাতো ভাই মো. শহিদুল ইসলাম সুমন, মো. রুম্মানসহ তাদের সঙ্গে মো. নজরুল ইসলাম বাবুল চৌকিদার, মো. নান্না, মো. লিটন, মো. মিরাজ, মো. সবুজ, মো. মাসুম শরিফসহ অন্তত ১০/১৫ জন মিলে আমার ভাই আবুল বাশার রুবেলের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তার ডাক-চিৎকারে বড় ভাই আবু সালেহ, তার স্ত্রী মোসা. সোনালী আক্তার রুবেলের ঘরে গেলে তাদের কুপিয়ে পাশের একটি ডোবায় ফেলে রাখে।
নিহত আবু সালেহের স্ত্রী লাভনী আক্তার বলেন, আমরা ঘরে ঘুমে ছিলাম, রাতে আমার দেবর রুবেলের চিৎকার শুনে আমার স্বামী আবু সালেহ ও আমি ঘরে থেকে বের হয়ে তার ঘরে গিয়ে দেখি সুমন ও আরও লোকজন রুবেলকে কুপিয়ে ফেলে রেখেছে। তারা আমার স্বামী আবু সালেহকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। আমার পায়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে।
তিনি আরও বলেন, তারা ঘরে থাকা এক লাখ টাকা ও দুই ভরি সোনা নিয়ে গেছে। আমরা ৯৯৯ ফোন দিলে ভান্ডারিয়ার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে আমার স্বামী আবু সালেহ এবং দেবর আবুল বাশার রুবেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেওয়ার পথে আমার স্বামী মারা যায়। দেবর আবুল বাশার রুবেলের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ভান্ডারিয়া থানার ওসি আহমেদ আনওয়ার বলেন, জমিজমা ও বালুর ব্যবসার দ্বন্দ্বের জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। আমরা রাতেই তাদের উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবু সালেহ এবং আবুল বাশার রুবেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পথে আবু সালেহ মারা যায়। এ ঘটনায় সুমনের স্ত্রী রেকছোন বেগমকে আটক করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদের ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি।
মন্তব্য করুন