আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান হাফিজ।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে হাতিয়া উপজেলা সদরে ধানসিঁড়ি গেস্ট হাউসের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হাফিজুর রহমান বলেন, আবদুল হান্নান মাসউদ হাসিনা সরকার পতনের এক দফার ঘোষক। সে ৫ আগস্টের আগে একাধিক বার রাজপথে হামলার শিকার হয়েছেন। আজ তাকে তার নিজ জন্মভূমি হাতিয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলি। এই সন্ত্রাসীদের প্রায় সবাই বিএনপির রানিং কমিটির নেতাকর্মী। ৩/৪ জন বহিষ্কৃত সদস্য ছিল। সুতরাং বহিষ্কৃত নেতাকর্মী বলে বিএনপি এই ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না। আমরা বিএনপির এই বহিষ্কার বহিষ্কার নাটক করে দায়সারা কর্মকাণ্ড আর দেখতে চাই না। উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর বিএনপির হাইকমান্ড হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করে ৩ মাস পর আবার তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়। সুতরাং আমরা এসব আইওয়াশ সাংগঠনিক বিচার দেখতে চাই না। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রকিবুল হাসান রাকিব, জাহাজমারা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক প্রার্থী মোহাম্মদ নকিব উদ্দিন, পল্টন থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিমেল ও হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান গং এই ন্যক্কারজনক হামলার নেতৃত্ব দেয়।
হাফিজুর রহমান বলেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ আমাদের অন্তত ৫৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এরমধ্যে ১৫ জন গুরুতর আহত হয়। ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এমনকি বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের ছত্রছায়াধীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী দল মিলে জুলাই অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে শহীদ হওয়া হাতিয়ার রিটন ভাইয়ের ছোট ভাই আরিফ ভাইয়ের উপরও ন্যাক্কারজনক হামলা করে। আমাদের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে ও কয়েকটি লুট করে নিয়ে যায়। আমরা বিএনপির এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দেখে সকল বিএনপির সন্ত্রাসীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। বিএনপিকে এ হামলার দায় স্বীকার করে সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আজকে ইফতার পরবর্তী ওছখালীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ, তৌহিদুর রহমান, মো. ইসমাইল ও হাসিদুর রহমান। আহত থাকায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি আব্দুল হান্নান মাসউদ।
মন্তব্য করুন