জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ইউনিয়ন যুবদলের পদ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ নেতা আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার পাররামপুর ইউনিয়নের তারাটিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পাররামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম সওদাগর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন- পাররামপুর ইউনিয়ন যুবদলের নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি আবু মিয়া, বাবলু মিয়া, ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস মিয়া ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাজ্জাক।
ইউনিয়ন বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মার্চ লুলু মণ্ডলকে সভাপতি ও সোহানুর রহমান সাইদুরকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০৬ সদস্যবিশিষ্ট পাররামরামপুর ইউনিয়ন যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় উপজেলা যুবদল। নবগঠিত এই কমিটি নিয়ে পদ না পাওয়া সাইদুর ও মোহাম্মদ আলীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। বিষয়টি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় উভয়পক্ষকে মীমাংসার জন্য ডেকে নেন ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা।
আরও জানা গেছে, এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে দুইপক্ষই ইউনিয়ন বিএনপির অফিস থেকে চলে যায়। ইফতারের সময় ইউনিয়ন যুবদলের অস্থায়ী কার্যালয়ে পদবঞ্চিত নেতা মিন্টু, মান্নান ও মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে দেওয়ানগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। পরে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান সাইদুরের ব্যক্তিগত মনিহারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শুভ এন্টারপ্রাইজে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
নবগঠিত ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান সাইদুর বলেন, সন্ধ্যায় আমাদের ইউনিয়ন যুবদলের নেতাকর্মীরা তারাটিয়া বাজারে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে ইফতারের আয়োজন করছিলেন। এমন সময় দলের নেতা মিন্টু, মান্নান, মোহাম্মদ আলী, শামিম ও আরিফুলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। আমাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন।
পাররামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম সওদাগর বলেন, সোমবার বিকেলে মীমাংসার জন্য দুই পক্ষকে বিএনপির কার্যালয়ে ডাকা হয়। তারা আমাদের কথা শোনেনি। পরে ইফতারের সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার নেপথ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পাররামপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিকে সেলিমের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
একাধিক যুবদল নেতা জানান, জিকে সেলিমের পরামর্শে পাররামপুর ইউনিয়ন বিএনপির কর্মকাণ্ড চলছে। যুবদলের সংঘর্ষের ঘটনা তারই প্রতিফলন বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান জিকে সেলিম কালবেলাকে জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জেলে গিয়েছিলাম, এখন আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমি চাল বিতরণ করলাম, আমার নামে অযথা অভিযোগ করা হচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি নাজমুল হাসান কালবেলাকে বলেন, পাররামপুর ইউনিয়নে মারামারি ঘটনা শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন