আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ফেনীর সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারিদের ভারতীয় অবৈধ গরু চোরাইপথে আনার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সীমান্তে বিজিবির টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি, গোয়েন্দা নজরদারি ও তল্লাশি পয়েন্ট বাড়ানোর কারণে সীমান্ত এলাকায় ধরা পড়ছে গরুর চোরাচালান। বিগত এক মাসে প্রায় ৪০টির অধিক গরু জব্দ করেছে ফেনী বিজিবি।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ঈদ ঘিরে গরু চোরাকারবারি গরু ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে তারা স্থানীয় বিভিন্ন বাজার থেকে গরু ক্রয় করছে বলে বিভিন্ন প্রকার ভুয়া রসিদ/পূর্বে সংগৃহীত ভাউচার ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।
কিন্তু বিজিবি কর্তৃক গরু আটক করার সঙ্গে সঙ্গে গরুর বৈধতা সম্পর্কে ক্রয় ভাউচার/হাসিল/রসিদ চাওয়া হলে তারা দেশের বিভিন্ন বাজারের অসংগত ভাউচার উপস্থাপন করে আসছে, যা পরে বিজিবি কর্তৃক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জিজ্ঞাসাবাদ ও সরেজমিন যাচাইয়ান্তে পরিলক্ষিত হচ্ছে, গরু ক্রয়ের ভাউচার/হাসিল/রসিদের সঙ্গে গরু ক্রয়ের টাকার পরিমাণ, গরুর রং ও বর্ণনা এবং ক্রেতার বক্তব্যে কোনো প্রকার সামঞ্জস্য নেই।
প্রাথমিকভাবে তাদের গরু ক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করার জন্য সময় দেওয়া হলেও তারা প্রতিবারই বৈধ কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং একই গরুর বিভিন্ন রকমের ভাউচার উপস্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করছে।
বিজিবি আরও জানায়, চলতি মাসে ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) কর্তৃক সীমান্ত এলাকায় সুনির্দিষ্ট সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিয়মিত ও বিশেষ চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার জয়ন্তিনগর ও রক্তারহাট এলাকা, পরশুরাম উপজেলার মহেশপুস্কুরনী এলাকা, ফুলগাজী উপজেলার দেবীপুর এলাকা এবং চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম অলিনগর সোনাপুর এলাকা ও বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে ৪০টি ভারতীয় অবৈধ গরু জব্দ করতে সক্ষম হয়। গরুগুলোর বৈধ কাগজ প্রদর্শন করতে না পারায় বিজিবি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থানীয় কাস্টম অফিসে জমা দিয়েছে।
স্থানীয় গরু খামারি এমদাদ হোসেন মিস্টার কালবেলাকে জানান, ভারতীয় গরুর আধিক্য বাড়লে আমরা খামারিরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাব। এমনিতে পশুখাদ্যের তীব্র সংকট। তার ওপর যদি ওপার থেকে গরু আসে, তবে দাম পাব না। তিনি এজন্য গরু চোরাচালান রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
ফেনী বিজিবির পরিচালক (অধিনায়ক) লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন কালবেলাকে জানান, ঈদকে সামনে রেখে গরু চোরাকারবারিরা সীমান্ত এলাকায় অপতৎপরতা শুরু করেছে। তবে আমরা তাদের সব তৎপরতা রুখে দিতে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করেছি। এ ছাড়া চোরাচালানের বিরুদ্ধে বিজিবির কঠোর নীতি অব্যাহত রয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
মন্তব্য করুন