ন্যায্য ভাতা না পেয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের কর্মচারীরা। সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে কলেজের প্রশাসনিক ভবন থেকে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে অচল হয়ে পড়েছে মাস্টার্সের ভর্তির কার্যক্রমসহ কলেজের সব স্বাভাবিক কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়েছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
কলেজ সূত্র জানায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মচারীরা ডিউটি করেন। এতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত অর্থ অভ্যন্তরীণ তহবিল থেকে পরীক্ষা কার্যক্রমে থাকা কর্মচারী, শিক্ষক ও অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ পেয়ে থাকেন। কর্মচারীরা পূর্বে ন্যায্য হিস্যা পেলেও বর্তমান অধ্যক্ষ আসার পর থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। ন্যায্য পাওনা বুঝে পাওয়ার দাবিতে কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী জানান, এখন পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়টি পরীক্ষা হয়েছে। দুটি পরীক্ষা কমিটি টাকা ভাগ করে নিয়ে গেছে। আমরা পূর্বে যা পেতাম তা এখন তার অর্ধেকের থেকেও নামিয়ে আনা হয়েছে। আমরা কীভাবে চলবো। পিকে ভিত্তিক চাকরি করে কয় টাকা বেতন পাই। অথচ বিসিএস ক্যাডার শিক্ষকরা আমাদের গরীব মানুষদের টাকা নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে তারা আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার কথা। আমরা কয়েকবার স্যারের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কোনো সুরাহা পাইনি। তারা যখন নতুন হিস্যা করবে আমাদের সঙ্গে বসার ও আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা করেননি। নিজের ইচ্ছা মতো সব ভাতার হিস্যা করে নিয়েছেন। আমাদের সমস্যার সমাধান হলেই আবার কাজে ফিরব।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও অধ্যক্ষের প্রধান সহকারী মাজহারুল আলম বলেন, ঠিকাভিত্তিক কর্মচারীরা সামান্য কিছু টাকা পায়। সেই টাকা দিয়ে কীভাবে চলে। আমাদের শিক্ষক কর্মকর্তাদের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত ছিল। আমি বারবার গিয়েছি তাদের কাছে। তারা বলেছিলেন- কর্মবিরতিতে যাবেন। তাদের নিবৃত্ত করে রেখেছিলাম। কিন্তু তারা ন্যায্য পাওনা না পেয়ে এখন আন্দোলনে নেমে পড়েছে। এই সমস্যাটা দ্রুত সমাধান করা হোক। আমাদের সঙ্গে তারা বসুক।
কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, নতুন অধ্যক্ষ এসে এমনটা করেছেন। এটা ঠিক হয়নি। কারণ এখানে কমিটি লাভবান হবে। কিন্তু আমাদের কর্মচারীরা তেমন সুবিধা পাবে না। আমরা এটা স্যারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কর্মচারীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করেনি বণ্টন কমিটি। সুতরাং বণ্টননীতি করার সময়ই শিক্ষকদের পক্ষে করা হয়েছে। যার কারণে আজ এই সমস্য সৃষ্টি হয়েছে।
বণ্টন নীতিমালা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী করেছি। যারা বলছেন বণ্টন ঠিক হয়নি সেটা আপেক্ষিক বিষয়। কর্মচারীরাও আমাদের অংশ। বণ্টনের সময় কর্মচারীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি। তারা অভিযোগ করেছিল। কিন্তু এটাতো আমি একা করিনি। বোর্ডের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবুল বাসার ভূঁঞাকে একাধিকবার ফোন করেও ফোন রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন